• দেড় মাস বাস বন্ধ গৌরাঙ্গ সেতুতে, সন্ধান বিকল্পের
    আনন্দবাজার | ১৬ নভেম্বর ২০২৫
  • টানা দেড় মাস নবদ্বীপের গৌরাঙ্গ সেতু দিয়ে বাস চলবে না। যার কারণে চরম হয়রানির শিকার হতে চলেছেন নদিয়া-সহ একাধিক জেলার হাজার-হাজার যাত্রী। আর্থিক সঙ্কটে পড়তে চলেছেন কয়েকশো বাস মালিক ও শ্রমিক।

    পরিস্থিতি সামাল দিতে বিকল্প পথের সন্ধান করা হচ্ছে। প্রশাসনের পাশাপাশি বাস মালিকেরাও নিজেদের মধ্যেও বারবার আলোচনায় বসছেন। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, সেতুর দুই পার থেকে বাস ছাড়া হতে পারে। দূরপাল্লার বাসগুলিকে গৌরাঙ্গ সেতুর এক পাশে নবদ্বীপের দিকে রেখে দেওয়া হতে পারে। সেই সঙ্গে অন্য রুটের কিছু বাসও থাকবে। দু’দিকেই বাস গৌরাঙ্গ সেতু পর্যন্ত গিয়ে থেমে যাবে। সে ক্ষেত্রে যাত্রীরা বাস থেকে নেমে হেঁটে সেতু পেরিয়ে অন্য পার থেকে বাস ধরতে পারবেন। প্রয়োজনে কৃষ্ণনগর থেকে নবদ্বীপ ঘাট রুটে বাসের সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে বলেও বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

    শনিবার থেকেই গৌরাঙ্গ সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচলের উপর নিয়ন্ত্রণ শুরু হয়েছে। আগামী দেড় মাস এই নিয়ন্ত্রণ বলবৎ থাকবে। তার মধ্যে ছ’দিন সমস্ত ধরনের যান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকছে। বাকি দিনগুলিতে তিন মেট্রিক টনের নীচে ছোট গাড়ি যাতায়াত করতে পারবে। তবে এই ক’দিন পণ্যবাহী ছোট গাড়িও সেতুর উপর দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে না। গাড়ি চলবে অত্যন্ত ধীর গতিতে, ঘণ্টায় পাঁচ কিলোমিটার বেগে। কিন্তু সেতু দিয়ে কোনও বাস চলবে না। ফলে যাত্রী পরিবহণে সঙ্কট তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন বাস মালিক থেকে শুরু করে যাত্রীরা।

    শুধু মাত্র নদিয়া নয়, মুর্শিদাবাদ ও উত্তর ২৪ পরগনার একটা বিরাট অংশের সঙ্গে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম ও বাঁকুড়া জেলার যোগাযোগের প্রধান উপায়। প্রতি দিন প্রায় ৮০টি বাস এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করে। বাসগুলি কালনা, কাটোয়া, বর্ধমান, বেনাচিতি, দুর্গাপুর, আসানসোল পর্যন্ত যাতায়াত করে। এর বাইরেও বর্ধমান বা দুর্গাপুর পর্যন্ত গিয়ে সেখান থেকে বাঁকুড়া, বীরভূম পর্যন্তও অনেকে যাতায়াত করেন। বাস মালিক সমিতির হিসাবে, এই সেতু দিয়ে দৈনিক প্রায় ১৫ হাজার মানুষ বাসে যাতায়াত করেন। ফলে বিরাট সংখ্যক মানুষকে প্রায় দেড় মাস ধরে হয়রান হতে হবে।

    কাটোয়া রুটের নিত্যযাত্রী তন্ময় সরকার বলেন, “এত দিন সেতু বন্ধ থাকলে আমাদের খুবই অসুবিধা।” নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি দুর্জয সিংহ রায় বলেন, “যাত্রীদের পাশাপাশি আমাদেরও তো বাঁচতে হবে! এত জন বাসকর্মীর টাকা, বাস কেনার জন্য অনেকের ব্যাঙ্কের কিস্তিও আছে। সবটা নিয়েই ভাবতে হচ্ছে। আমরা তাই বিকল্প কয়েকটা উপায়ের কথা ভেবে রেখেছি। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে কিছু না কিছু ব্যবস্থা করব।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)