• দিঘা সৈকতে ধুঁকছে ঘোড়া সওয়ারি পরিষেবা, ভাড়া কেমন? কী বলছেন ব্যবসায়ীরা?
    এই সময় | ১৬ নভেম্বর ২০২৫
  • ঘোড়ার পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়াবেন দিঘার সমুদ্র সৈকতে। ইচ্ছে থাকে অনেক পর্যটকের। তবে ইচ্ছেপূরণের উপায় কমছে ক্রমশ। দিঘায় পর্যটকদের মনে জায়গা করে নিয়েছে বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস। চাহিদা কমেছে ঘোড়া সওয়ারি পরিষেবার। কমেছে এই পেশার সঙ্গে যুক্তদের উপার্জনও। ধীরে ধীরে কি অবলুপ্তির পথে সমুদ্র সৈকতে ঘোড়া করে ভ্রমণের ব্যবস্থা?

    আগে ওল্ড ও নিউ দিঘা জুড়ে প্রায় ১০০ মতো ঘোড়া সাওয়ারিদের দেখা মিলত। বর্তমান সময়ে সেই সংখ্যাটা ৩৫-৪০ এসে দাঁড়িয়েছে। বছর তিনেক আগেই প্রায় ২৫০টি পরিবার এই বাক্যের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বংশানুক্রমে এই ব্যবসা চালাতেন অনেকেই। নিউ দিঘার কাছেই থাকতেন এই পরিবারগুলি। যতদিন যাচ্ছে, উপার্জন কমছে এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের।

    ঘোড় সওয়ারির জন্যে আগে প্রতিদিন একজনের দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা করে উপার্জন হতো। বর্তমানে দিঘায় অফ সিজনে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা এবং উৎসবের দিন গুলিতে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা উপার্জন হচ্ছে। প্রায় অর্ধেক হয়েছে উপার্জন। দিঘার সমুদ্রতটে একজন সাওয়ারিকে ২০০ মিটার আপ ডাউনের জন্য ১০০ টাকা এবং দু’জন হলে ১৫০ টাকা নেওয়া হয়।

    ঘোড়ার মূত্র-বিষ্ঠা থেকে দূষণ ছড়ানোর কারণে বছর তিনেক আগেই এই পরিষেবা তুলে দেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছিল। সৈকতে পড়ে থাকা ঘোড়ার মল সমুদ্রের জলে মিশে দূষণ তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছিল। সেই কারণে এই পরিষেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ। চিন্তায় পড়েছিলেন এই পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা। পরে এই সিদ্ধান্ত বিবেচনার জন্যে রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরির সঙ্গেও দেখা করেন ঘোড়ার মালিকরা। পরবর্তীকালে ঠিক হয়, জনবহুল জায়গায় ঘোড়া নিয়ে যাওয়া যাবে না। দূষণ যাতে না ছড়ায়, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। এত কিছুর মাঝেও এই পরিষেবা কি বন্ধ হয়ে যাবে? দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের কার্যনির্বাহী আধিকারিক সুরজিৎ পন্ডিত জানালেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।

    গত ৩০ বছর ধরে ঘোড়া সাওয়ারির কাজে যুক্ত রামনগরের পদিমা এলাকার বাসিন্দা রমাকান্ত পন্ডা। তাঁর বক্তব্য, ‘আগে এক একজন মালিকের ৫/৭ টা ঘোড়া সমুদ্রতটে ব্যবসা করত। এখন স্থানীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ঠিক করা হয়েছে একজন মালিকের সর্বোচ্চ ৩টি ঘোড়া সমুদ্রে ব্যবসার কাজে যুক্ত থাকতে পারবে। ফলে আয় কমেছে।’ অনেকেরই বক্তব্য, একটি ঘোড়া পোষার জন্য প্রয়োজনীয় রসদ জোগানো যাচ্ছে না এই পেশা থেকে। সুধীর দাস নামে এক ঘোড়ার মালিক বলেন, ‘বিহার থেকে বিপুল অর্থের বিনিময়ে ঘোড়া নিয়ে আসা হয়। উপার্জন সেই ভাবে না হওয়ায় নতুন করে কেউ ঘোড়া কিনছে না অনেকেই। যাঁরা এখনও যুক্ত, তাঁরা কোনওকমে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।’

  • Link to this news (এই সময়)