তদন্তে নতুন মোড়! লালকেল্লার সামনে বিস্ফোরণস্থল থেকে মিলল ৩টি কার্তুজ, ঘর ভাড়া নেওয়া হয়েছিল হরিয়ানার নুহতে
বর্তমান | ১৭ নভেম্বর ২০২৫
নয়াদিল্লি: দিল্লি বিস্ফোরণ কাণ্ডে নয়া মোড়? লালকেল্লার সামনে বিস্ফোরণস্থল থেকে এবার তিনটি ৯ মিলিমিটার কার্তুজ উদ্ধার করল ফরেনসিক টিম। এর মধ্যে দুটি তাজা কার্তুজ ও একটি খোল। যদিও ঘটনাস্থলে কোনও পিস্তল বা রিভলভার পাওয়া যায়নি। এরপরেই বিস্ফোরণে জড়িতদের উদ্দেশ্য নিয়ে নতুন করে জল্পনা তৈরি হয়েছে। পুলিশের একটি সূত্র রবিবার জানিয়েছে, ভারতে ৯ মিলিমিটার ক্যালিবারের কার্তুজ ব্যক্তিগত বন্দুকে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। তাই ওই কার্তুজ কোথা থেকে এল, তা নিয়ে ধন্দ আরও বেড়েছে। তদন্তকারীদের মতে, বিস্ফোরণের জায়গায় থেকে কার্তুজ উদ্ধার অবশ্যই এই ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ সূত্র। আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া না যাওয়ার একাধিক কারণ থাকতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। কার্তুজগুলি বন্দুক থেকে খুলে সেখানে রাখা হয়েছিল, নাকি তদন্তকে ভুল পথে চালিত করার জন্য সেগুলি পরে ওই জায়গায় রাখা হয়, তা খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, লালকেল্লা নাশকতায় হরিয়ানার আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক চিকিত্সকের নাম জড়িয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়মের খবর ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। এবার তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, গত ২৯ অক্টোবর আল-ফালাহতে একদিন দাঁড়িয়েছিল বিস্ফোরণে ব্যবহৃত আই-২০ গাড়িটি। মেন গেট দিয়ে গাড়িটি ক্যাম্পাসে ঢোকে। ৩০ অক্টোবর দুপুরে গাড়িটি সেখান থেকে চলে যায়। বিস্ফোরণে জড়িত চিকিত্সক উমর উন নবিই গাড়িটি চালাচ্ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
উমরকে নিয়েও নতুন তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগেও হরিয়ানার নুহ এলাকায় ছিল উমর। সিসি ক্যামেরার সূত্র ধরে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ৩০ অক্টোবর নুহের হিদায়াত কলোনিতে একটি আল্ট্রা-সাউন্ড সেন্টারের পিছনে ঘর ভাড়া নেয় উমর। সেক্ষেত্রে আল-ফালাহ থেকেই সে সরাসরি নুহতে এসে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ঘর ভাড়া নিতে উমরকে সাহায্য করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শোয়েব খান নামে এক ইলেকট্রিশিয়ান। হিদায়াত কলোনিতে আফসানা নামে তাঁর আত্মীয়ের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে ওই কর্মী। ভাড়া ও সিকিউরিটি মানি বাবদ ৬ হাজার টাকা আফসানাকে দেয় উমর। শোয়েব ও আফসানাকে আটক করে জেরা করছে পুলিশ। তাঁর মেয়ে জানিয়েছেন, উমর বেশিরভাগ সময় একা ঘরে থাকত। শুধু রাতে বেরিয়ে রাস্তার দোকান থেকে খাওয়াদাওয়া সারত সে। উমর দুটি স্মার্টফোন ব্যবহার করত বলেও জানিয়েছেন আফসানার মেয়ে। তিনি আরও জানিয়েছেন, ১১দিন ধরে একই পোশাকে ছিল উমর। ৯ নভেম্বর রাতে হঠাত্ করেই ওই ঘর ছেড়ে চলে যায়। পরদিনই দিল্লিতে বিস্ফোরণ হয়।
উমরের মৃত্যুর পরেই নুহের ওই তালাবন্ধ ঘরে তল্লাশি চালায় দিল্লি পুলিশ এবং এনআইএ। উমরের গতিবিধি জানতে ওই আল্ট্রা-সাউন্ড সেন্টারের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাতে বিস্ফোরণে ব্যবহৃত আই-২০ গাড়িটিকেও দেখা গিয়েছে। সিসি ক্যামেরার সূত্র ধরে উমর কার কার সঙ্গে দেখা করেছিল, তা জানার চেষ্টাও করছেন তদন্তকারীরা।