• ইডেনেই অনলাইন বেটিং, ভিন রাজ্যের ৩ পান্ডা ধৃত
    বর্তমান | ১৭ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ইডেন গার্ডেনের ভিতরেই চলছিল ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের অনলাইন বেটিং। লালবাজারের অভিযানে হাতেনাতে পাকড়াও হল ভিন রাজ্যের বেটিং চক্রের তিন পান্ডা। ধৃতদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও লেনদেন সংক্রান্ত নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে দুবাইয়ের বেটিং চক্রের সিন্ডিকেটের যোগ রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। 

    ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট ম্যাচের জন্য পুলিশি  নিরাপত্তায় কোনও ফাঁক রাখতে চায়নি লালবাজার। মাঠের ভিতর কেউ বেটিং সিন্ডিকেট চালাচ্ছে কি না, তা ধরতে বাড়তি নজর ছিল গোয়েন্দাদের। কারণ, এর আগে ইডেনে ম্যাচ চলাকালীন স্টেডিয়ামের ভিতর থেকে বেটিং সিন্ডিকেট চক্রের লোকজন ধরা পড়েছিল। ক্লাব হাউসের গ্যালারিতে বসেই বেটিং চালাচ্ছিল তারা। তাই এবার বাড়তি সতর্ক ছিলেন গোয়েন্দারা। শনিবার তাঁরা জানতে পারেন, স্টেডিয়ামের এফ ব্লকে কিছু লোক অনলাইনে বেটিং চালাচ্ছে। সেই মতো গোয়েন্দারা সেখানে পৌঁছে দেখেন, কয়েকজন বি আর ৩৬৫, আর ৭৭ ও ওয়ান ইত্যাদি অ্যাপ ব্যবহার করছে। কে বল করছে, রান কত হলো, বলটি কী ধরনের ইত্যাদি বিষয়ে অনলাইন আপডেট দিচ্ছে তারা। খেলোয়াড়ের উপর বাজি ধরা চলছে। প্রথমে স্টেডিয়াম থেকে তিনজনকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা বিহার,  মহারাষ্ট্র ও গুজরাতের বাসিন্দা। বেটিংয়ের সূত্র ধরেই তাদের আলাপ। দেশের যে কোনও প্রান্তে ম্যাচ হলেই তারা সেই স্টেডিয়ামে হাজির হতো। গ্যালারিতে বসে লাইভ বেটিং চক্র চালাত। সেই মতো তারা ইডেনেও হাজির হয়েছিল ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে বেটিং চালাতে। তাদের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করতেই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। দেখা যায়, প্রতি বল, রান, উইকেট, খেলোয়াড় ঩পিছু টাকা ধরা রয়েছে। বিভিন্ন লোক অনলাইন বেটিং অ্যাপে টাকা লাগাচ্ছে। সেই টাকা অভিযুক্তদের ওয়ালেটে জমা পড়ছে। যে জিতছে, তাকে সঙ্গেসঙ্গে অনলাইনেই টাকা ‘ট্রান্সফার’ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এই প্রমাণ হাতে আসার পর তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। 

    ধৃতদের জেরা করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, এই অনলাইন বেটিং চক্রটির সদর দপ্তর দুবাইতে। সেখান থেকেই গোটা কারবার নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। মুম্বইতে বড় মাথারা বসে রয়েছে। তারা দুবাইয়ের নির্দেশমতো বিভিন্ন এজেন্টের কাছে মেসেজ পাঠাচ্ছে। প্রতি মুহূর্তে দর বদল হচ্ছে। ধৃতদের দাবি, তাদের সঙ্গে দুবাইয়ের বেটিং সিন্ডিকেটের মাথাদের যোগাযোগ রয়েছে। বিদেশে ভারত খেলতে গেলে সেখানেও তারা যাচ্ছে।  অনলাইন বেটিংয়ে আসা টাকা জমা পড়ছে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে। সেখান থেকে নগদ তুলে হাওলা করে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। লেনদেনের সূত্র ধরে অ্যাকাউন্টের মালিকেদের খোঁজ চালাচ্ছেন তাঁরা।
  • Link to this news (বর্তমান)