• ছবি থেকে বানান, ফর্ম সংগ্রহের শুরুতেই বিপত্তি
    আনন্দবাজার | ১৭ নভেম্বর ২০২৫
  • এনুমারেশন ফর্ম বিলি প্রায় শেষ। এ বার পূরণ করা ফর্ম সংগ্রহ শুরু করলেন বিএলও-রা। তাতে বিপত্তিও বাধছে। কোনও ফর্মে রয়েছে ভোটারের কান কাটা ছবি, তো কোনও ফর্মে অজস্র বানান ভুল। সেই সব সংশোধন করতে শীতেও ঘামছেন বিএলও-রা। ফর্ম সংগ্রহে কার্যত নাকাল হচ্ছেন গড়বেতার তিনটি ব্লকের অনেক বিএল-ও।

    ৪ নভেম্বর থেকে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) শুরু হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম (গণনাপত্র) দিয়ে নির্বাচন কমিশন নিযুক্ত বিএলও-রা ভোটারদের বুঝিয়ে এসেছেন কোথায়, কী লিখতে হবে। তবে তথ্য পূরণের পরে সেই ফর্ম সংগ্রহে বেরিয়ে বিএলও-রা দেখছেন নানা অসঙ্গতি। বানান ভুল তো আছেই, অনেকে আবার ২০০২ সালে নাম থাকা সত্ত্বেও অন্য ঘর পূরণ করেছেন।

    তবে বিএলও-দের বেশি ভাবাচ্ছে ছবির বিষয়টি। গণনাপত্রের মাথায় নির্দিষ্ট একটি ঘরে ভোটারদের সাম্প্রতিক ছবি সাঁটাতে বলা হয়েছে। কিন্তু অনেক ছবিই বেশ পুরনো, অস্পষ্ট। কারও ছবিতে আবার দু’টি কান দেখা যাচ্ছে না। গড়বেতা ১ ব্লকের কয়েকজন বিএলও জানালেন, এ সব ছবি হলে কমিশনের নির্দিষ্ট অ্যাপে আপলোড করতে খুব অসুবিধা হবে।সাম্প্রতিক ছবি না থাকলেও সমস্যা।

    তাই অনেকেই নতুন করে দিচ্ছেন। গড়বেতা ১ ব্লকের আমকোপা অঞ্চলের এক বৃদ্ধা বললেন, ‘‘ছবিতে কান দু’টি দেখা যাচ্ছে না বলে আমাকে নতুন করে ছবি তুলে এসআইআরের ফর্মে লাগাতে হয়েছে।’’ গোয়ালতোড়ের এক ভোটারের কথায়, ‘‘প্রথমে সাদা-কালো ছবি দিয়ে ফর্ম পূরণ করেছিলাম। পরে রঙিন ছবি দিতে হয়েছে।’’ নির্বাচনের কাজে যুক্ত ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক জানালেন, ‘‘কমিশনের ভার্চুয়াল বৈঠকে ফর্মে ভোটারদের ছবি দেওয়া আবশ্যক বলা হয়েছে। ছবি এমন হতে হবে, যা নির্দিষ্ট অ্যাপের মানানসই হয়। প্রয়োজনে ভোটারদের কাছে গিয়ে লাইভ ছবি করতে হবে, বিএলও-দের বলে দেওয়া হয়েছে।’’

    অজস্র বানান ভুলে ভরা ফর্ম পেয়েও নাকাল হচ্ছেন বিএলও-রা। গড়বেতা ৩ ব্লকের এক বিএলও বলেন, ‘‘ফর্ম দেওয়ার সময় বারবার বলে দিয়েছিলাম, যে রকম বানান আধার কার্ড, ভোটার কার্ডে আছে, সে রকম বানানই লিখতে। ফর্ম সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখছি, অনেকে ভুলভাল বানান লিখেছেন। সাদা কালি দিয়ে ভুল বানান মুছে ঠিকটা লিখে ফর্ম জমা নিয়েছি।’’ কেউ কেউ ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট ঘরের বদলে অন্য ঘরে তথ্যপূরণ করেছেন। এর উল্টোটাও পাওয়া যাচ্ছে। বিএলও-রা বলছেন, ‘‘ফর্ম সংগ্রহে প্রচুর সময় লাগছে। নাকালও হতে হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে সংশোধন করিয়ে নিতে হচ্ছে, অনেকের ফর্ম নির্ভুল ভাবে পূরণ করাতে হচ্ছে।’’ ফর্ম সংগ্রহে অনেকের বাড়িতে দু’-তিন বার করে যেতেও হচ্ছে।

    নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট করেছে, ফর্মের তথ্যে ভুল থাকলে এবং অ্যাপে ভুল তথ্য আপলোড হলে তার দায় বিএলও-র তাই। এ ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্ক থাকছেন কমিশন নিযুক্ত এই কর্মীরা। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ভোটারদের পূরণ করা ফর্ম সংগ্রহ শুরু করেছেন বিএলও-রা। ফর্ম জমা নেওয়ার আগে সেগুলি নির্ভুল ভাবে পূরণ হয়েছে কিনা, তাঁরাদেখে নিচ্ছেন।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)