নিয়ম করে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি চলছেই বলে অভিযোগ উঠেছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। নেফ্রলজি, অর্থোপেডিক, চোখের মতো আরও বেশ কিছু বিভাগে চিকিৎসকদের একাংশ সপ্তাহে তিন দিনের বেশি থাকছেন না বলে অভিযোগ।
অভিযোগ, রোগী পরিষেবা খামতি ছাড়াও অনেক ক্ষেত্রেই ওই সমস্ত বহির্বিভাগে যতজন চিকিৎসক থাকার কথা তা থাকছেন না। দিনের পর দিন এ ভাবে চললেও কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও সদর্থক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, চিকিৎসকেরা ছুটি নিচ্ছেন। তবে ছুটি নির্দিষ্ট সীমার বাইরে হলে বেতন কাটা হচ্ছে চিকিৎসকদের।
হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় মল্লিক বলেন, ‘‘যারা থাকছেন না তারা ছুটি নিয়ে থাকছেন না। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট দিনের বেশি ছুটি হলে তাঁদের বেতন কাটা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই অনেকের বেতন কাটাও হয়েছে।’’ মেডিক্যালের কর্মীরা জানাচ্ছেন, নিয়মের বাইরে গিয়ে অনেক চিকিৎসক ছুটি নিচ্ছেন। তা কর্তৃপক্ষের বক্তব্যেই স্পষ্ট। যে কারণে বাধ্য হয়ে কর্তৃপক্ষ বেতন কাটতে বাধ্য হচ্ছেন।
নিয়ম মাফিক সপ্তাহে ছ’দিন হাসপাতালে হাজিরা দেওয়ার কথা। অভিযোগ, অর্থোপেডিক, নেফ্রলজির মতো বেশ কিছু বিভাগে অনেক চিকিৎসক সপ্তাহে তিন দিনও থাকেন না। বিশেষ করে যাদের বাড়ি কলকাতা বা দক্ষিণবঙ্গে। সপ্তাহে দুই তিন দিন থেকে তাঁরা চলে যান।
কর্তৃপক্ষের দাবি, হাজিরা না থাকলে তাঁদের ছুটিতে দেখাতে হচ্ছে। নিয়ম ভাঙলেই বেতন কাটা হচ্ছে। তবে সচেতন চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ, ছুটি দেখিয়ে দিলেই তো হল না। দিনের পর দিন কেউ-কেউ আসবেন না আর ছুটি হিসাবে দেখাবেন সেটাই বা কেন। রোগীর পরিষেবার ক্ষতি করে ওই সমস্ত চিকিৎসকদের লাগাতার ছুটি কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিচ্ছে কী ভাবে?
স্থানীয় বাসিন্দা থেকে রোগীদের পরিবার অনেকেরই এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, বহির্বিভাগে অনেক সময় দীর্ঘ লাইন দিয়ে দেখাতে হচ্ছে। বহির্বিভাগে এক দু’জন চিকিৎসক থাকছেন। অথচ নিয়ম মাফিক হয়তো ওই দিন তিন-চার জন চিকিৎসক থাকার কথা। তাতে রোগী পরিষেবা ব্যহত হচ্ছে। অন্তর্বিভাগেও অনেক সময় জুনিয়র চিকিৎসকদের উপর নির্ভর করে চিকিৎসা পরিষেবা চালাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, কোনও চিকিৎসক ছুটিতে থাকলে তার জায়গায় অন্য চিকিৎসক বেশিরভাগ সময়ই দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।