• SIR-এর ধাক্কায় শিকেয় উঠেছে কাজ-কারবার, সমস্যায় সাধারণ মানুষ থেকে BLO
    এই সময় | ১৭ নভেম্বর ২০২৫
  • সৌমেন মণ্ডল, হলদিয়া

    রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে 'সার'-এর (স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন) কাজ। তার জেরে যেমন স্কুলের পড়ানো ছেড়ে বিএলও-র (বুথ লেভেল অফিসার) ডিউটি করছেন বিভিন্ন এলাকার শিক্ষকরা, তেমনই কাজকর্ম ফেলে বাড়িতে বসে থাকছেন বহু দিন আনা দিন খাওয়া মানুষও। কেন? তাঁরা বলছেন, 'বিএলও এসে যদি বাড়িতে তালা দেখে ফিরে যান! সে ক্ষেত্রে তো পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। কেউ বলবে অনুপ্রবেশকারী, কেউ বলবে শরণার্থী। তখন কী হবে?'

    আর সেই ভয়ে বাধ্য হয়েই বাড়িতে থাকছেন টোটোচালক শঙ্কর দাস বা কৃষক প্রভাত দাসরা। শঙ্কর সম্প্রতি নতুন টোটো কিনেছেন। কিন্তু বিএলও-র অপেক্ষায় বাড়িতেই থাকছেন। শঙ্করের কথায়, 'স্ত্রী পরিচারিকার কাজ করেন। তাই আমি বাড়িতে আছি। কখন বিএলও চলে আসবেন, বুঝতে পারছি না।' তিনি বলছেন, 'দিনকাল ভালো | না। বাড়িতে এসে তালা দেখলে কে আবার কী ভেবে বসবে। টোটো কিনেও বেরোনো হচ্ছে না। রোজগার কমে যাচ্ছে।' জমিতে পাকা ধান পড়ে রয়েছে প্রভাত দাসের। কিন্তু ধান কাটার লোক মিলছে না। আবার ফর্ম পূরণ করে জমা না-দেওয়া পর্যন্ত তিনিও খেতে যেতে পারছেন না।

    শিক্ষকেরা বিএলও-র ডিউটিতে যাওয়ার ফলে ফাঁপরে পড়ছে স্কুলগুলোও। নন্দীগ্রামের শিমূলকুণ্ড বোর্ড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দু'জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। দু'জনেই বিএলও-র কাজ করছেন। পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল খাইয়েই ছুটি দিতে বাধ্য হচ্ছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কবিতারানি জানা। একই চিত্র খঞ্জনচক ধনঞ্জয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শিক্ষকের অভাবে একটি কক্ষেই দুই শ্রেণির পড়ুয়াদের বসিয়ে চলছে ক্লাস।

    ভিড় বেড়েছে আদালত, হাসপাতাল, পুরসভা, পঞ্চায়েত অফিস ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরেও। সর্বত্রই নথি সংগ্রহের ভিড় উপচে পড়ছে। বাধ্য হয়ে কাজ কামাই করতে হচ্ছে অনেককে। হলদিয়া পুরসভা ভবনে স্থায়ী বাসিন্দার শংসাপত্র নিতে এসেছিলেন শঙ্কর মিদ্যা। তাঁর ক্ষোভ, 'জন্ম থেকেই হলদিয়ায় বাস করছি। প্রতি বছর সব রকম কর দিই। তার পরেও 'সার'-এর ফর্ম পূরণ করতে হচ্ছে। কাজকর্ম ফেলে নথির খোঁজে ছুটতে হচ্ছে এদিক-ওদিক।'

  • Link to this news (এই সময়)