সরকারি বাসে আগুন রুখতে বসছে স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৭ নভেম্বর ২০২৫
রাজ্যের সরকারি বাসে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পরিবহন দপ্তরের চিন্তা বাড়ছে। হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও কয়েকটি বাস সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়ায় যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই পরিস্থিতিতে বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি কমাতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। নতুন কেনা সব সরকারি বাসেই বসানো হবে স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র।
সম্প্রতি পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, দপ্তরের সচিব সৌমিত্র মোহন এবং ডব্লিউবিটিসি, এসবিএসটিসি ও এনবিএসটিসি-র শীর্ষ কর্তাদের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। সেখানে বাসের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে আলোচনা হয়। অতীতের বেশির ভাগ আগুন লাগার ঘটনায় রক্ষণাবেক্ষণের ত্রুটি ধরা পড়েছিল। তাই রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জরুরি অবস্থায় যাত্রীদের দ্রুত নামাতে ড্রাইভার ও কন্ডাক্টরদেরও আলাদা প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
দপ্তর সূত্রের খবর, নতুন যন্ত্র আগুন লাগামাত্রই তা নিজে থেকেই শনাক্ত করবে এবং কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করবে। এতে আগুন ছড়ানোর আশঙ্কা কমবে ও যাত্রীদের নিরাপত্তা বাড়বে। প্রতিটি যন্ত্রের দাম প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। পাশাপাশি বাসের গঠনেও পরিবর্তন আনার চিন্তাভাবনা চলছে। ফাইবার বডির বদলে অ্যালুমিনিয়াম বডির বাস কেনার দিকে জোর দেবে সরকার, কারণ অ্যালুমিনিয়াম আগুনে তুলনামূলক কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতিটি ডিপোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বাস রাস্তায় নামানোর আগে বাধ্যতামূলকভাবে বিস্তারিত চেকিং করতে হবে।
শীঘ্রই বাস রক্ষণাবেক্ষণ ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোটোকল) প্রকাশ করবে রাজ্য সরকার। ভবিষ্যতে সব সরকারি বাস সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। বেসরকারি সংস্থাগুলিকেও প্রয়োজনে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
তবে পুরনো সরকারি বাসগুলিতে স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র বসানো হবে না। বেশির ভাগ পুরোনো বাসেরই বয়স সাত-আট বছর পেরিয়ে গিয়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই সেগুলি বাতিল করা হতে পারে। তাই সেগুলিতে সাধারণ অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রই যথেষ্ট বলে মনে করছে দপ্তর। সরকারের আশা, নতুন প্রযুক্তি ও উন্নত রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা চালু হলে সরকারি বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে।