কাজ শুরু কেন্দ্র নিযুক্ত পাহাড়ের ‘মধ্যস্থতাকারী’র! ‘অসাংবিধানিক’ বলে ফের মোদিকে চিঠি মমতার
প্রতিদিন | ১৮ নভেম্বর ২০২৫
মলয় কুণ্ডু: ফের একতরফা সিদ্ধান্ত কার্যকর করল কেন্দ্র! পাহাড়ে কেন্দ্রের নিযুক্ত ‘মধ্যস্থতাকারী’ (Interlocutor) কাজ শুরু করেছেন সম্প্রতি। আর এই বিষয়টি সম্পূর্ণ ‘অসাংবিধানিক’ বলে ফের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে তিনি স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন, গত ১০ নভেম্বর থেকে কেন্দ্রের নিযুক্ত মধ্যস্থতাকারী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে যে কাজ শুরু করেছেন, সেই খবর অত্যন্ত বিস্ময়কর ও হতাশাজনক। রাজ্যের আবেদন কার্যত উড়িয়ে, কোনও প্রত্যুত্তর না দিয়ে কেন্দ্র যে ফের একতরফা সিদ্ধান্ত কার্যকর করল, তা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী বলে চিঠিতে মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ঘটনাকে ঘিরে আবারও কেন্দ্র-রাজ্য বড়সড় সংঘাতে জড়াল বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।
পাহাড়ে ‘মধ্যস্থতাকারী’ নিয়োগ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের মতানৈক্যের সূত্রপাত সেই অক্টোবরে। আসুন, ঘটনা পরম্পরায় একবার নজর রাখা যাক। গত মাসে দেশের প্রাক্তন উপ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা তথা অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার পঙ্কজ কুমার সিংহকে দার্জিলিং ও তরাই-ডুয়ার্সের ইন্টারলোকুটর বা মধ্যস্থতাকারীর (সমন্বয় রক্ষাকারী) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে জানা যায়, এই সমস্ত এলাকায় গোর্খাদের দীর্ঘদিনের দাবিদাওয়াগুলি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে নিয়োগ করা হয়েছে রাজস্থান ক্যাডারের এই অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্তাকে। তিনি একজন অভিজ্ঞ জাতীয় নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ। সীমান্ত নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক বিষয়ে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। কিন্তু এই নিয়োগের আগে নবান্নের সঙ্গে নয়াদিল্লির কোনও আলোচনা হয়নি বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। এই পদক্ষেপ দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি। এতে পাহাড়ে শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কাও করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর অনুরোধ, পঙ্কজ কুমার সিংহর নিয়োগের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে তা প্রত্যাহার করা হোক।
সেই চিঠির পরও কেন্দ্রের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি। তার মাঝেই কেন্দ্র নিযুক্ত মধ্যস্থতাকারী অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার পঙ্কজ কুমার সিংহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে কাজ শুরু করেছেন বলে খবর। সেই খবরের ভিত্তিতেই মুখ্যমন্ত্রী সোমবার নতুন করে চিঠি পাঠালেন প্রধানমন্ত্রীকে। চিঠিতে স্পষ্ট বিরোধিতা করে মমতা লিখেছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার পুরোপুরি এই অসাংবিধানিক, রাজনৈতিক অভিসন্ধিমূলক সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফের তাঁর আবেদন, সিদ্ধান্ত এখনই স্থগিত করা হোক।