রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রায়! হাসিনার পাশে দাঁড়িয়ে ইউনুস প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুললেন চিন্ময় প্রভুর আইনজীবী
প্রতিদিন | ১৮ নভেম্বর ২০২৫
অর্ণব দাস, বারাকপুর: আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে তিনটি ধারায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন শেখ হাসিনা। তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিল বাংলাদেশের আদালত। বাংলাদেশে আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এদিকে সেই রায়কে প্রহসন বলে কটাক্ষ করেছেন শেখ হাসিনা। বিবৃতি জারি করে তিনি বলেছেন, “জনমত ছাড়াই গঠিত হওয়া সরকার এই ট্রাইবুনাল গঠন করেছে। তাই এই আদালতের কোনও বৈধতা নেই। যেভাবে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়েছে, সেটা আসলে ইউনুস সরকারের মৌলবাদীদের খুনে মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ।” এবার শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়িয়ে ইউনুস সরকারকে কাঠগড়ায় তুললেন চিন্ময় প্রভুর আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁর কথায়, “তাই আমি এই রায়কে সুষ্ঠু বিচার বলে মনে করি না। এটা কোনও সাধারণ রায় নয়, একটি রাজনৈতিক রায়।”
আজ, সোমবার দুপুরে আদালত শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। সেই রায় ঘোষণার আগে থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে প্রতিবেশী রাষ্ট্র। রায় ঘোষণার পর থেকেই কার্যত অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। শোনা গিয়েছে, রায় ঘোষণার পরই ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরপর ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বাসে। হিংসা থামাতে ইতিমধ্যেই দেখলেই গুলি চালানোর নির্দেশ জারি করেছে প্রশাসন।
ইসকনের সদস্য চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুও বাংলাদেশে জেলবন্দি। প্রহসন করে তাঁকে জেলবন্দি রেখেছে ইউনুস সরকার, সেই অভিযোগও উঠেছে এপার বাংলায়। তাঁর আইনজীবী মুক্তিযোদ্ধার সৈনিক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। শেখ হাসিনার সাজা ঘোষণার পর তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। শুধু তাই নয়, এই রায়কে প্রহসন বলে বাংলাদেশের ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “শেখ হাসিনার ফাঁসির সাজায় আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। শেখ হাসিনা যদি বাংলাদেশ যান, তাহলে এই রায়ের বিরুদ্ধে ৩০ দিনের মধ্যে আবেদন করতে পারেন। এটাও ঠিক, উনি গেলে গ্রেপ্তার হয়ে যাবেন।” তিনি আরও বলেন, “এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ফাঁসি কীভাবে কার্যকর হবে?” তাঁর কথায়, “আদালতে উপস্থিত না থেকে কারোর বিচার হলে সেটাকে সুষ্ঠু বিচার বলা যায় না। ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে এটি একটি প্রতিবন্ধকতা। তাই আমি এই রায়কে সুষ্ঠু বিচার বলে মনে করি না। এটা কোনও সাধারণ রায় নয়, একটি রাজনৈতিক রায়।”
দীর্ঘ বিবৃতিতে শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশে প্রশাসন ভেঙে পড়েছে। অপরাধে ভরেছে গোটা দেশ। আওয়ামি লিগের বিরুদ্ধে অন্যায় করেও দোষীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। হিন্দু এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চলছে, নারীদের অধিকার খর্ব হচ্ছে, গ্রেপ্তার হচ্ছেন সাংবাদিকরা। প্রশাসনের মধ্যে মৌলবাদীরা ঢুকে পড়ে বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ ক্ষুণ্ণ করছে। নির্বাচন পিছিয়ে দিয়ে বাংলাদেশের প্রাচীনতম দলকে ভোটপ্রক্রিয়া থেকে সরিয়ে দিয়েছে।”