২০০২-এর ভোটার হলেও তালিকায় নাম নেই! ‘SIR আতঙ্কে’ এবার দমদমে ‘আত্মঘাতী’ ব্যক্তি
প্রতিদিন | ১৮ নভেম্বর ২০২৫
বিধান নস্কর, দমদম: রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ‘এসআইআর আতঙ্কে’ মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসছে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল দক্ষিণ দমদম। মৃতের নাম বৈদ্যনাথ হাজরা। সোমবার সকালে বাড়ির এলাকার একটি গাছে তাঁর গলায় ফাঁস লাগানো মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁর নাম ছিল না। বাবা-মা ছোটবেলায় মারা যাওয়ায় সেসময়ের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ওই ব্যক্তির কাছে ছিল না বলে খবর। সেই কারণে বেশ কয়েক দিন ধরেই তিনি আতঙ্কিত ছিলেন বলে পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আর এন গুহ রোডের বাসিন্দা ছিলেন বছর ৪৭-এর বৈদ্যনাথ হাজরা। বাবা-মা ছোটবেলায় মারা গিয়েছেন। ২০০২ সালের ভোটার তালিকাতেও তাঁদের নাম ছিল না বলে খবর। এদিকে সেসময় বৈদ্যনাথ হাজরার ভোটার হিসেবে বয়স হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেসময় তাঁরও ভোটার তালিকায় নাম ওঠেনি। কী কারণে সেই নাম ওঠেনি, সেই কথা জানা যায়নি। পেশায় গাড়িচালক বৈদ্যনাথ হাজরার স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে সংসার। বাংলায় এসআইআর প্রক্রিয়া চালু হলে আতঙ্কে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম নেই বৈদ্যনাথ হাজরার। এদিকে বাবা-মাও মারা গিয়েছেন আগেই। ফলে ওই ভোটার তালিকায় নাম না থাকলে কী হবে? পরিবার কোন সমস্যায় পড়ে যাবে? সেই বিষয় নিয়ে প্রবল দুশ্চিন্তা, আতঙ্কে তিনি পড়ে গিয়েছিলেন।
জানা গিয়েছে, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে হাজরা পরিবার ওই এলাকাতেই বসবাস করছে। বর্তমান ভোটার তালিকায় বৈদ্যনাথের নামও রয়েছে। বন্ধুবান্ধব ও অন্যান্যরা কিছু হবে না বলে বৈদ্যনাথকে আশ্বস্তও করেছিলেন। কিন্তু আতঙ্ক কাটেনি তাঁর। কয়েক দিন ধরে ঠিকমতো খাওয়াদাওয়াও করছিলেন না। স্ত্রী জয়ন্তী হাজরা জানিয়েছেন, রবিবার রাত ২টো নাগাদ তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। মোবাইল ফোনও বাড়িতে রেখে যান। রাতেই পরিবারের তরফে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করা হয়েছিল। আজ, সোমবার সকালে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হল। ওই এলাকারই একটি গাছে ফাঁস লাগানো অবস্থায় বৈদ্যনাথের ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পাওয়া যায়। স্থানীয়রাই পরিবারের সদস্যদের ওই দুঃসংবাদ দেন।
খবর দেওয়া হয় থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। স্বামীর মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন স্ত্রী। বাবার মৃত্যুতে সন্তানরা শোকস্তব্ধ। ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।