ক্যারন চা বাগান এলাকায় চুংপাতাং নদীর গতিপথ পরিবর্তন, বাঁধের দাবি
বর্তমান | ১৮ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, নাগরাকাটা: চুংপাতাং। ভুটান থেকে নেমে আসা এক পাহাড়ি নদী। ডুয়ার্সের নাগরাকাটার ক্যারন চা বাগানের সামনে দিয়েই প্রবাহিত হয়েছে। নাম শুনলে মন জুড়িয়ে যায়। প্রকৃতিপ্রেমী থেকে ট্রেকার এমনকী স্কুল কলেজের ছেলেমেয়েরা গত বছরেও চুংপাতাং নদী অববাহিকায় নেচার ক্যাম্প করেছেন। এখানকার প্রাকৃতিক মনোরম সৌন্দর্য যে কাউকেই প্রকৃতির কোলে বুঁদ হয়ে থাকতে মোহিত করে দেবে। কিন্তু গত ৫ অক্টোবরে নাগরাকাটার ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে চুংপাতাং নদী গতিমুখ পরিবর্তন করে ক্যারন চা বাগান ও সংলগ্ন বস্তিগুলির দিকে ধেয়ে আসছে। আগামী বছরের বর্ষার সময় এই নদী চা বাগান ও বস্তিগুলিকে গিলে খেয়ে নেবে। তার আগে চাই চুংপাতাংকে আটকাতে নদী বাঁধ। না হলে সাত হাজার মানুষের জীবন বিপন্ন হবে। এই বাঁধের দাবিতে গত রবিবার চুংপাতাং নদীর চরে নেমে বিক্ষোভ প্রতিবাদে সরব হন এলাকার বাসিন্দারা। গ্রামবাসীদের প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন পঞ্চায়েত সদস্য সুনীতা ওরাওঁ।
এই ক্যারন চা বাগানেই বসবাস করেন অসুর সম্প্রদায়ের কয়েকশ মানুষ। প্রকাশ অসুর বলেন, চুংপাতাং পাহাড়ি নদী গ্রাম থেকে ১কিমি দূরে অবস্থান করছিল। কিন্তু ৫ অক্টোবরের দুর্যোগের পর নদী থেকে চা বাগান ও গ্রামগুলির দূরত্ব মাত্র ৫০ মিটার। একটি বাঁশ গাছের বিশাল ঝোঁপ নদীর প্রবাহকে আটকে রেখেছে। স্থানীয় বাসিন্দা শনিরাম ওরাওঁ, সুরেন্দ্র মুণ্ডা বলেন, এবারের দুর্যোগে নদী এগিয়ে এসে ২৫ হেক্টর আবাদি জমি গ্রাস করেছে। আমরা চাই আগামী বর্ষার আগেই নদীর জল যাতে গ্রামে না ঢোকে সেজন্য বাঁধ দিতে হবে।
রবিবার ক্যারন চা বাগান ও চারটি গ্রাম প্রেমনগর, বরগাছ, খাপড়া ও মাদ্রাজ বস্তির কয়েকশ বাসিন্দা চুংপাতাং নদী তীরে জমায়েত হন। তাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়ে দাবি করেন, অবিলম্বে চুংপাতাং নদীর গ্রাস থেকে ১২ হাজার মানুষকে বাঁচাতে নদী বাঁধ দিতে হবে। এই বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সুনীতা ওরাওঁ। তিনি বলেন, খুবই বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে গ্রামগুলি। চুংপাতাং নদী ক্রমশ এগিয়ে আসছে। এখন নদীতে জল না থাকলেও আগামী বছর বর্ষায় পরিস্থিতি ভয়ানক আকার নেবে। আমাদের বাঁচাতে নদী বাঁধ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
নাগরাকাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঞ্জয় কুজুর বলেন, চুংপাতাং নদী এগিয়ে আসার খবর পেয়েছি। এলাকা পরিদর্শন করে কী করা যায় প্রশাসনকে জানাব। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি কৃষ্ণা রায় বর্মন বলেন, এলাকাবাসী ও পঞ্চায়েত সমিতির প্রস্তাব এলে জেলাশাসক ও সেচদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে নদী বাঁধ নিয়ে কী করা যায় তা গুরুত্ব দিয়ে দেখব। • নিজস্ব চিত্র।