• তালিকায় নাম বিভ্রাট, চিন্তায় ভোটাররা
    বর্তমান | ১৮ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: নাম বিভ্রাট! স্ত্রী ও মেয়ের ভোটার তালিকায় পরিবারের অভিভাবকের নাম দু’রকম। আবার ভোটার তলিকায় কারও কারও নাম ও পদবিতে রয়েছে ত্রুটি। এসআইআর পর্বে শিলিগুড়িতে এনিয়ে আতঙ্কিত সংশ্লিষ্ট ভোটাররা। এরবাইরে মহকুমায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৪ শতাংশ ভোটার অসুরক্ষিত। তাঁদেরকে ‘হেয়ারিং’-এ তলব করতে পারে নির্বাচন কমিশন। অন্যদিকে, এসআইআর ইস্যুতে তৃণমূল কংগ্রেসের ক্যাম্পকে বিজেপি টেক্কা দিতে পারছে না বলে অভিযোগ। 

    ইতিমধ্যে শিলিগুড়ি মহকুমায় অধিকাংশ ভোটারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ইনিউমারেশন ফর্ম। এখন ভোটারদের কাছ থেকে ফিলআপ হওয়া ফর্ম সংগ্রহ ও ডিজিটাইজেশনের কাজ করছেন বিএলওরা। এমন প্রেক্ষাপটে চম্পাসারিতে ভোটার তালিকায় নাম বিভ্রাটে বিপাকে পড়েছেন বেশকিছু বাসিন্দা। যাঁদের মধ্যে সুনীল সরকার একজন। স্ত্রীর ভোটার তালিকায় স্বামী হিসেবে সুনীল এবং মেয়ের ভোটার তালিকায় বাবা হিসেবে পাখি নাম দু’টি উল্লেখ রয়েছে। মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মন বলেন, সুনীলবাবুর ডাক নাম পাখি। তাঁকে এজন্য হলফনামা দাখিল করার পরামর্শ দিয়েছি। এছাড়া ভোটার তালিকায় দীপকবাবুর নামের বানান দীপ, অনির্বাণ দাসের জায়গায় হয়েছে সরকার। এসআইআর পর্বে সংশ্লিষ্ট ভোটাররা চিন্তায় রয়েছে। 

    এদিকে, এসআইআরের শুরুতেই মহকুমা প্রশাসন সুরক্ষিত ও অরক্ষিত ভোটারদের নামের তালিকা প্রস্তুত করেছিল। প্রশাসন সূত্রের খবর, মহকুমার তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৮ লক্ষ ৪ হাজার জন। এরমধ্যে শিলিগুড়িতে ২ লক্ষ ৩৯ হাজার, মাটিগাড়া-নকশালবাড়িতে ৩ লক্ষ ১৩ হাজার এবং ফাঁসিদেওয়ায় ২ লক্ষ ৫২ হাজার জন ভোটার রয়েছেন। প্রাথমিকভাবে সংশ্লিষ্ট ভোটেরর মধ্যে ৫৩.৯৬ শতাংশের নাম ২০০২ সালের ভোটার তলিকায় নেই। এমন ভোটারের সংখ্যা মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি কেন্দ্রে সর্বাধিক, ৬১ শতাংশ। এরবাইরে শিলিগুড়ি ও ফাঁসিদেওয়া কেন্দ্রে এমন ভোটারের সংখ্যা, যথাক্রমে ৫০ এবং ৪২ শতাংশ। ওই ভোটারদের হেয়ারিংয়ে ডাকতে পারে নির্বাচন কমিশন। 

    তবে মহকুমায় প্রাথমিকভাবে ‘সুরক্ষিত’ ভোটারের সংখ্যা ৪৬.০৩ শতাংশ। এমন ভোটারের সংখ্যা ফাঁসিদেওয়া বিধানসভা কেন্দ্রে সর্বাধিক, প্রায় ৫১ শতাংশ। শিলিগুড়ি ও মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে এমন ভোটারের সংখ্যা যথাক্রমে ৫০ এবং ৩৯ শতাংশ। ২০০২ ও ২০২৫ এই দু’টি সালের ভোটার তালিকাতেই তাঁদের নাম রয়েছে। প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, বিএলওর রিপোর্ট মেলার পর সুরক্ষিত ভোটারের সংখ্যা আরও বাড়বে। 

    এদিকে, এসআইআর পর্বে তৃণমূলের ক্যাম্প রমরমা। দলের বিএলএ-১ পাপিয়া ঘোষ বলেন, মানুষের পাশে থেকে এসআইআরের কাজ করছি। তাই আমাদের ক্যাম্পে মানুষের ভিড় উপচে পড়লেও বিরোধীদের দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হচ্ছে। এতে হালে পানি না পেয়ে সিএএ’র নাম করে ভোটারদের ভয় দেখাতে চাইছে বিজেপি। 

    পদ্ম শিবির অবশ্য অভিযোগ মানতে নারাজ। দলের মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক বলেন, রাজনৈতিক জমি হারানোর আতঙ্কে তৃণমূল ওসব বলছে। ছাব্বিশের নির্বাচনে তৃণমূলের তরী ডুবিয়ে দেবেন ভোটাররা।
  • Link to this news (বর্তমান)