সাগর রজক, মানিকচক: মানিকচকের হাহাজান ঘাটে সেতুর দাবিতে আন্দোলন করতে এবার জোট বাঁধছেন ছয় গ্রামের বাসিন্দারা। ঘেরাও, বিক্ষোভ, ভোট বয়কটসহ একাধিক পথ বেছে নিয়েছে গ্রামবাসীদের নিয়ে গঠিত প্রতিবাদী সভা। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কোনওরকম রাজনৈতিক সমর্থন ছাড়াই আন্দোলন করা হবে।
মানিকচক ব্লকের নাজিরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে কালিন্দ্রী নদীতে এই হাহাজান ঘাট। তার উপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয় নাজিরপুর অঞ্চলের লক্ষ্মীকোল, লস্করপুর, হরিপুর, জিতমানপুর, অন্যদিকে রতুয়া-১ ব্লকের কাহালা অঞ্চলের আটগামা, বলরামপুরের প্রায় সাত হাজার বাসিন্দাকে। কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার বাসিন্দার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীরা প্রতিদিন যাতায়াত করে। বর্ষাকালে বাঁশের সাঁকো এবং জল কমলে হিউম পাইপ বসিয়ে মাটি ফেলে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এই রাস্তায় যাতায়াত করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনায় আহত হন বাসিন্দারা। তাই স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে সেতুর দাবি জানিয়ে আসছেন।
স্থানীয়দের দাবি, নেতা-মন্ত্রীরা সেতু করার আশ্বাস দিলেও এখনও পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। সেতুর দাবিতে ২০১৪ সালেও ভোট বয়কট করা হয়েছিল। সেই সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল সেতু করে দেওয়া হবে। কিন্তু সেই দাবি পূরণ হয়নি। তাই সেতুর অভাবে মেটাতে এবার ছ’টি গ্রামের বাসিন্দারা জোট বেঁধে বেছে নিলেন আন্দোলনের পথ।
সোমবার লস্করপুরের হরিবাসর মন্দির প্রাঙ্গণে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে সভা হয়। আন্দোলন করতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, সেবিষয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ২০২৬ নির্বাচনের আগে হাহাজান ঘাটে সেতু নির্মাণ শুরু না হলে ভোট বয়কটের পথে হাঁটবেন তাঁরা। এমনকি, কোনও রাজনৈতিক দলকে এলাকায় সভা বা কর্মসূচি করতে দেওয়া হবে না। পাশাপাশি, ব্লক ও জেলা প্রশাসনে ডেপুটেশন, পথ অবরোধ, বিক্ষোভ সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাসিন্দারা।
সভার নেতৃত্বে ছিলেন দুলাল মিঞা, নন্দলাল মণ্ডল, বাবলু মাহালদার, নরেন মণ্ডল সহ অন্যরা। এবিষয়ে নরেন বলেন, আমরা দীর্ঘদিন রাজ্য সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিধায়ক, মন্ত্রীর আশ্বাস শুনেছি। কিন্তু এবার কাজ চাই। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে কাজের জন্য অর্থ বরাদ্দ বা কাজ না শুরু করা হলে ভোট বয়কট করব আমরা। এছাড়া অন্য পদক্ষেপও নেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, এলাকায় কোনও ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে দেব না।
মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পিঙ্কি মণ্ডল বলেন, বিষয়টি জানা নেই, খোঁজ নিয়ে দেখব। ভোট বয়কট করা ঠিক নয়। আলোচনার মাধ্যমে সবকিছুর সমাধান