সাবি’র একাধিক পুরুষসঙ্গী! মানতে পারেনি চেত নারায়ণ, খুন করে কাটিহারে আত্মীয়দের বাড়িতে গা ঢাকা
বর্তমান | ১৮ নভেম্বর ২০২৫
তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: খুন করে টানা ২২ দিন বিহারের কাটিহার জেলার পুয়ালে একাধিক আত্মীয়ের বাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছিল এনজেপি’র হোটেলে মহিলা খুনে মূল অভিযুক্ত। আত্মীয়দের বাড়িতে থাকলেও দু’চোখের পাতা এক করতে পারেনি অভিযুক্ত চেত নারায়ণ দাস ওরফে প্রেম। রবিবার রাতে তার এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকেই তাকে গ্রেফতার করে এনজেপি থানার পুলিশ। তবে প্রাথমিক জেরায় মহিলা তথা প্রেমিকাকে ধোকাবাজ বলে তদন্তকারীদের কাছে দাবি করেছে প্রেম।
প্রেমের সম্পর্কে থেকেও অন্য একাধিক পুরুষের সঙ্গে মেলামেশা মেনে নিতে পারেনি প্রেম। নিজে বিবাহিত হলেও সম্পর্ক ভালো ছিল না স্ত্রীর সঙ্গে। তদন্তকারীদের প্রেম জানিয়েছে, দু’বছর আগে সোশ্যাল মিডিয়াতে সাবি কুমারীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। দু’বছরের সম্পর্ক হলেও শিলিগুড়িতেই প্রথম ঘনিষ্ঠ হয় দু’জনের। কিন্তু সেই প্রেমিকার একাধিক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি জানতে পেরে তাদের মধ্যে একাধিকবার ঝামেলা হয়। তাই সঙ্গে নিয়ে এসে শোধরানোর চেষ্টা করেছিল প্রেম। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং ঘুরতে নিয়ে গিয়ে প্রেমিকার মন পেতে চেয়েছিল। তবে তার আগেই এনজেপির হোটেলে রাত ১০টা নাগাদ প্রেমিকার মোবাইলে একাধিক ভয়েস মেসেজ পায় প্রেম। সেসময় প্রেমের অফিসের এক মহিলাও তার মোবাইলে ফোন করেছিল। দু’জনে দু’জনের অন্য সম্পর্ক নিয়ে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ে। সেসময় সাবি প্রেমকে লাথি মারে। এরপরেই রাগের বশে প্রেমিকাকে থাপ্পড় মারতেই সংজ্ঞা হারায় সাবি। তারপর বিছানায় সাবির উপর চড়ে বসে গলা টিপে তাঁকে খুন করে বলে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে প্রেম। ছোট্ট মেয়ের কান্নার আওয়াজে সম্বিত ফিরতেই হাহুতাশ শুরু হয় তার। কোনও দিশা না পেয়ে মেয়েকে নিয়ে বিহারে পালিয়ে যায় সে।
পাটনার কাছে ট্রেনে থাকা এক মহিলার হাতে শিশুটিকে দিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে আসছি বলে চলন্ত ট্রেন থেকেই নেমে যায় প্রেম। মহিলাকে নিজের মোবাইল নম্বরও দিয়েছিল সে। ট্রেন ছাড়তেই মহিলা ওই নম্বরে ফোন করলেও সে সাড়া দেয়নি। যদিও পরের দিন মহিলার নম্বরে ফোন করে শিশুটির খোঁজ নেয় সে। মহিলা জানান সমস্তিপুর স্টেশনে নেমে জিআরপির কাছে শিশুটিকে দিয়ে দিয়েছেন তিনি। তা শুনে কিছুটা স্বস্তি পায় প্রেম। সেই সূত্র ধরেই শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে এনজেপি থানার পুলিশ। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসিপি রাকেশ সিং বলেন, আমরা অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে হেফাজতে নিয়েছি। খুনের কারণ জানতে তদন্ত চলছে।
উল্লেখ্য, ২৪ অক্টোবর রাতে শিলিগুড়ির নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন সংলগ্ন হোটেল থেকে এক মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তাঁর সঙ্গে থাকা প্রেমিককে ধরতে এরপর থেকেই লাগাতার তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। শেষ পর্যন্ত রবিবার তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।