• রানিগঞ্জ-মোড়গ্রাম জাতীয় সড়কের উপর ১৩ সেতুর সংস্কারে বরাদ্দ ৫০ কোটি টাকা, দু’বছরের মধ্যে সবক’টির কাজ শেষ করার নির্দেশ
    বর্তমান | ১৮ নভেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: ভালো নেই জাতীয় সড়কের উপরে থাকা একাধিক ব্রিজের স্বাস্থ্য। কয়েকবছর আগেই ‘ডিজাইন লাইফ’ শেষ হয়ে গিয়েছে। বছর আটেক আগে ‘দুর্বল ব্রিজ’ সাইনবোর্ডও ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরও সেই দুর্বল সেতুগুলির উপর দিয়েই অনবরত ভারী যানবাহন চলাচল করছে। দিন কয়েক আগেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তিলপাড়া সেতু। যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর বড় আঘাত নেমে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় সড়কের উপরে থাকা ১৩টি  গুরুত্বপূর্ণ সেতুর সংস্কারে নামল জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। যার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৫০ কোটি টাকা, বলে জানিয়েছেন রামপুরহাট মহকুমার জাতীয় সড়কের দেখভালের দায়িত্বে থাকা অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার দেবাঞ্জন মুখোপাধ্যায়।  

    বীরভূম জেলার উপর দিয়ে চলে গিয়েছে রানিগঞ্জ-মোড়গ্রাম ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। রানিগঞ্জ থেকে মোড়গ্রামের দুরত্ব প্রায় ১৬০ কিমি। বীরভূম জেলার দুবরাজপুর, সিউড়ি, মহম্মদবাজার, মল্লারপুর, রামপুরহাট ও নলহাটির বুক চিরে চলে যাওয়া এই জাতীয় সড়ক মিশেছে ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে। দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই সড়ক। ছোট ও বড় মিলিয়ে সড়কের উপরে রয়েছে প্রায় ৪০টির মতো সেতু। যেগুলির কোনওটির বয়স ৭০, কোনওটির ৬০। তৈরির সময়ে ৫-১০ টনের গাড়ি যাতায়াত করতে পারবে, এমন নকশাতেই সেতুগুলি তৈরি হয়েছিল। বর্তমানে ওই সেতুর উপর দিয়ে একশো টনের বেশি মালপত্র বোঝাই যানবাহন যাতায়াত করছে। অতিরিক্ত ভারী গাড়ি চলাচলের ফলে প্রায়ই সেতুগুলির জায়গায় জায়গায় পিচ-পাথর উঠে ঢালাইয়ের খাঁচা বেরিয়ে পড়েছে। কোথাও আবার উপরের স্ল্যাব ভেঙে গিয়েছে। চালকদের ক্ষোভ, একটু ভারী যান চলাচল করলেই কাঁপতে থাকে সেতুগুলি। যে কোনও মুহূর্তে বিপদ ঘটতে পারে। 

    বছর আটেক আগে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য পরীক্ষায় নেমে জেলায় ব্রাহ্মণী, গম্ভীরা, দেউচা ব্যারেজ, দ্বারকা ক্যানেল, কুলে ব্রিজ, মহম্মদাবাজারের ক্যানেল ব্রিজ, তিলপাড়া রাইট ও লেফ্ট ক্যানেল, চন্দ্রভাগা, চিনপাই, দুবরাজপুরের সিঞ্জুরি ১ ও ২ ব্রিজ সহ আরও একটি ব্রিজকে দুর্বল ঘোষণা করে। যদিও তখন সেতুর উপর পিচের প্রলেপ আর রেলিংয়ে রঙ করা ছাড়া কিছুই হয়নি। বর্তমানে নলহাটিতে ১৯৬০ সালে নির্মিত ব্রাহ্মণী নদীর উপর ব্রিজের ঢালাইয়ের একাংশ ভেঙে গিয়ে শিক বেরিয়ে পড়েছে। যদিও ফি বছর ব্রাহ্মণীর পাশাপাশি একাধিক ব্রিজেরও একই অবস্থা হয়। এখন ব্রাহ্মণী ঩ব্রিজের পাশেই নদীবক্ষে অস্থায়ী কজওয়ে নির্মাণের কাজ চলছে। যাতে যানবাহন চলাচল সচল থাকে। সেটা হওয়ার পরই ব্রিজ সংস্কার শুরু হবে। এনএইচ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ব্রাহ্মণী ও গম্ভীরা ব্রিজের উপরের স্ল্যাব ভেঙে নতুন স্ল্যাব দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে এই দু’টির পাশে নতুন ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। জমি অধিগ্রহণ হয়ে আছে। মাপজোক চলছে। 

    প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেতুর ক্ষয় হতে থাকে। সেতুগুলির ডিজাইন লাইফ অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে সংস্কার করা হচ্ছে যাতে আরও পাঁচ বছর চলে। দেবাঞ্জনবাবু বলেন, দু’ বছরের মধ্যেই এই ১৩টি ব্রিজের সংস্কার শেষ করার নির্দেশ রয়েছে।  -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)