• খুনের পর দেহ টুকরো করেই আনন্দ দীঘার ‘সাইকো কিলারের’ বিরুদ্ধে চার্জশিট
    বর্তমান | ১৮ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: খুনের পর দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে আনন্দ পেত আনসারুল শাহ। দীঘা থানার রতনপুর গ্রামের বাসিন্দা আনসারুল পুলিশের কাছে ‘সাইকো কিলার’ হিসেবে পরিচিত। কলকাতার এক যুবতীকে খুনের পর ধড় ও মুণ্ড আলাদা করার পর দেহ বেশ কয়েক টুকরো করে বস্তাবন্দি করে রামনগরের বসন্তপুরের জঙ্গলে ফেলে দিয়েছিল। যুবতীর মাথা বালির নীচে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনার পর আনসারুলের টিমের সঙ্গী রাজীব দাস নৃশংসভাবে খুন হয়। সেই খুনের ঘটনায় চেন্না‌ই ঩থেকে আনসারুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপর জানা যায়, কলকাতার ওই যুবতীকে খুনের ঘটনাতেও জড়িত আনসারুল। ওই যুবককে হেফাজতে রেখেই বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করতে চায় পুলিশ। সেজন্য সম্প্রতি কাঁথি এসিজেএম আদালতে চার্জশিট জমা পড়েছে। ডিএনএ টেস্ট সহ রেশকিছু রিপোর্ট আসার পর ওই মামলার সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেওয়া হবে। সাইকো কিলার আনসারুলের সর্বোচ্চ সাজা চাইবে সরকার পক্ষ। এনিয়ে প্রয়োজনীয় যাবতীয় নথি জোগাড় করা হয়েছে।

    স্বয়ং পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য ওই মামলা মনিটরিং করছেন। সোমবার এনিয়ে ডিএসপি(ডিঅ্যান্ডটি) আবু নূর হোসেনের কাছ থেকে ওই মামলার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চেয়েছেন। পুলিশ সুপার বলেন, ওই মামলার চার্জশিট জমা পড়েছে। কিছু রিপোর্ট এলে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেওয়া হবে। অভিযুক্তকে সংশোধনাগারে রেখেই আদালতে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করাই আমাদের লক্ষ্য। 

    জানা গিয়েছে, আনসারুল দীঘায় বিভিন্ন হোটেলে যৌনকর্মী যুবতী ও মাদক সাপ্লাই করত। ১৮-২৫বছর বয়সি যুবকদের নিয়ে টিমও গড়েছিল। সেই টিম নানারকম আসামাজিক কাজকর্মে লিপ্ত থাকত। ২০২৪সালে ২৭অক্টোবর রামনগর থানার বসন্তপুরে শ্মশান সংলগ্ন জঙ্গলে এক যুবতীর বন্দাবন্দি দেহ উদ্ধার হয়। বস্তা খুল঩তেই হাড়হিম করা দৃশ্য। বস্তার ভিতর যুবতীর মুণ্ডহীন দেহ মেলে। শরীরে কোনও পোশাক ছিল না। দেহের সঙ্গে বাঁ হাত থাকলেও ডান হাত কাটা ছিল। শরীর থেকে দু’টি পা কেটে আলাদা করা হয়েছিল। দেহ দেখে আঁতকে উঠেছিল পুলিসও। শুরুতে পুলিশ ওই খুনের ঘটনায় কোনও ক্লু পাচ্ছিল না। যুবতীর মাথাও খুঁজে পাচ্ছিল না। পরবর্তীতে তাঁর পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি কলকাতার বাসিন্দা। দীঘার হোটেলে তাঁকে এনেছিল আনসারুলের গ্যাং। রামনগরে রাজীব দাস নামে আরও এক যুবককে নৃশংস খুনের ঘটনায় গত ২জুন পুলিস চেন্নাই থেকে আনসারুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাজীবেরও ধড় ও মুণ্ড আলাদা করা হয়েছিল। ধৃত আনসারুল পুলিশি জেরায় স্বীকার করেছে, রাজীবের পাশাপাশি বস্তাবন্দি ওই যুবতীকে খুনেও সেই জড়িত। আনসারুলের সহযোগী মুস্তাকিন শাহ পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। পুলিশ জানিয়েছে আনসারুল সাইকো কিলার। খুনের পর দেহ টুকরো টুকরো করে মজা পেত। তার সর্বোচ্চ সাজার লক্ষ্যে বাছাই করা আইনজীবী নিয়োগ করেছে ভবানী ভবন। ওই মামলায় স্পেশাল পিপি হিসেবে বিভাস চট্টোপাধ্যায়কে নিযুক্ত করেছেন ডিআইজি(লিগ্যাল)। এছাড়াও তাঁকে সহযোগিতা করার জন্য শান্তনু দে নামে আরও একজন আইনজীবীকে নিয়োগ করা হয়েছে। দু’জনের কেউ পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা নন। অভিযুক্তদের হেফাজতে রেখে মামলা নিষ্পত্তি করতে চায় জেলা পুলিশ।
  • Link to this news (বর্তমান)