মধ্যমগ্রাম শহরে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হবে নাইট সয়েল ট্রিটমেন্ট প্লান্ট
বর্তমান | ১৮ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: বহু বছর ধরে মধ্যমগ্রাম পুরসভা এলাকার নাইট সয়েল ফেলা হতো পুরসভার নিজস্ব ডাম্পিং গ্রাউন্ডে। ফলে, দুর্গন্ধের কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছিল। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে অবশেষে বড় পদক্ষেপ নিল মধ্যমগ্রাম পুরসভা। কেএমডিএ’র আর্থিক সহায়তা ও ব্যবস্থাপনায় এবার মধ্যমগ্রামেই তৈরি হবে অত্যাধুনিক ইন্টিগ্রেটেড সেপট্যাগ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট। এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ছ’কোটি টাকা। আগামী দু’বছরের মধ্যেই প্লান্টের নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে পুরসভা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে মধ্যমগ্রাম পুরসভা এলাকা থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার কিলোলিটার নাইট সয়েল সংগ্রহ করা হয়। এত পরিমাণ বর্জ্য সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করতে না পারায় পরিবেশে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। নতুন ট্রিটমেন্ট প্লান্ট চালু হলে প্রতিদিন ২৬ কিলোলিটার নাইট সয়েল প্রক্রিয়াজাত করা যাবে। আগামী ৩০ বছরের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হিসেব মাথায় রেখেই এই প্লান্টের নকশা তৈরি করা হয়েছে। এই প্লান্টে নাইট সয়েল ট্রিটমেন্ট করার পর যে জল ও অবশিষ্টাংশ বের হবে, তা নষ্ট না করে পুনরায় কাজে লাগানো হবে। ট্রিটমেন্টের পর পাওয়া পরিশোধিত জল ব্যবহার করা যাবে পুরসভার গাড়ি ধোয়া বা ডাম্পিং গ্রাউন্ড পরিষ্কারের কাজে। অন্যদিকে, প্রক্রিয়াজাত বর্জ্য থেকে তৈরি হবে জৈব সার, যা ব্যবহার করা হবে শহরের বাগান বা সবুজায়ন প্রকল্পে। এভাবে পুরো প্রক্রিয়াটি হবে পরিবেশবান্ধব।
মধ্যমগ্রাম শহরের অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শহরের একদম কাছেই রয়েছে কলকাতা বিমানবন্দর। যশোর রোড ধরে মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাওয়া যায় বিমানবন্দরে। আগামী বছর মাইকেলনগর পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে, শহরে বসবাসের চাহিদা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। জনবসতি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিক ব্যবস্থা নেওয়া সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় বিধায়ক তথা খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ পরিবেশ দূষণ রোধে এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে দরবার করেন। অবশেষে কেএমডিএ প্রকল্পটি অনুমোদন করেছে। শুরু হয়ে গিয়েছে টেন্ডার প্রক্রিয়া। এনিয়ে পুরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষ বলেন, এটি আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। এর ফলে শহরের পরিবেশ অনেকটাই উন্নত হবে। ট্রিটমেন্টের পর যে জল বেরবে, তা পুনরায় ব্যবহারযোগ্য হবে। তৈরি করা হবে সার। আগামী দু’বছরের মধ্যেই কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে আমরা আশাবাদী।