অয়ন ঘোষাল: কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া? এসে গেল মঙ্গলসকালের হাওয়া-সংবাদ (Today's Weather Update)। জানিয়ে দিলেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা হাবিবুর রহমান বিশ্বাস। কী বললেন তিনি? আপাতত খবরটি একটু হতাশাজনকই। জানা গিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে (South-west Bay of Bengal) একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। এটি শ্রীলঙ্কা উপকূলে (Sri Lanka Coast) প্রভাব বিস্তার করেছে। আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত (Cyclonic System) রয়েছে কোমোরিন এলাকার সমুদ্রে। দক্ষিণ বাংলাদেশ (South Bangladesh) ও সংলগ্ন এলাকায় তৈরি হয়েছে একটি আপার এয়ার সার্কুলেশন বা ঘূর্ণাবর্ত। আরও এক ঘূর্ণাবর্ত জন্ম নিতে পারে শনিবার। ফলে, নভেম্বরে আর জাঁকিয়ে শীতের আশা নেই বলেই মনে করছেন আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা।
অভিমুখ বদল
শনিবার রাতের পারদ ছিল ১৭.৭ ডিগ্রি। রবিবার রাতের পারদ ছিল ১৮.৫ ডিগ্রি। সোমবার রাতের পারদ ১৮.৬ ডিগ্রি। বৃহস্পতিবারের মধ্যে যা পৌঁছতে পারে ২১ বা ২২ ডিগ্রির ঘরে। ফলে, সাময়িক বিরতি ভোরের শীতল বাতাসের। বাংলায় হাওয়ার অভিমুখ বদল। কমছে কনকনে ঠাণ্ডা উত্তুরে হাওয়ার দাপট। বাড়ছে জলীয় বাষ্পপূর্ণ আর্দ্র পূবালি হাওয়ার প্রভাবও।
শীতের আমেজ গায়েব?
পশ্চিম ভারতের কনকনে ঠান্ডা হওয়ার গতিপথ রুদ্ধ করল বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণাবর্ত। দক্ষিণ-পূর্বের উষ্ণ বাতাস অর্থাৎ পূবালি হওয়ার দাপট আগামী ৬ দিন। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে ভোরের দিকে কুয়াশা। বেলা বাড়লে প্রায় ৯০ শতাংশ জলীয় বাষ্পের হাত ধরে কিছুটা প্যাচপ্যাচে অস্বস্তি। শীতের আমেজ আপাতত গায়েব। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে দিন ও রাতের পারদ আরও অন্তত ২ থেকে ৩ ডিগ্রি পর্যন্ত বাড়তে পারে। কার্যত মাটি হতে পারে শীতের হিমেল পরশ। শনিবারের পর মেঘলা আকাশ। মধ্য-দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে আরেকটি ঘূর্ণাবর্ত। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় শক্তি বাড়িয়ে যেটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
কুয়াশার দাপট
আগামীকাল ১৯ নভেম্বর এবং পরের দুদিন, যথাক্রমে ২০ ও ২১ নভেম্বর রাজ্যের প্রায় প্রতিটি জেলায় বাড়তে চলেছে কুয়াশার দাপট। কমতে পারে দৃশ্যমানতা। বিশেষত উপকূল এবং লাগোয়া কিছু জেলার দৃশ্যমানতা ২০০ মিটারে নেমে আসতে পারে। উত্তরবঙ্গের পার্বত্য জেলা এবং দক্ষিণবঙ্গের উপকূলের জেলাগুলিতে কুয়াশার প্রকোপ বেশি থাকার সম্ভাবনা।
একাধিক ঘূর্ণাবর্ত
দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে রয়েছে এক ঘূর্ণাবর্ত। এটি শ্রীলঙ্কা উপকূলে প্রভাব বিস্তার করেছে। আরও এক ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে কোমোরিন এলাকার সমুদ্রে। দক্ষিণ বাংলাদেশ ও সংলগ্ন এলাকায় তৈরি হয়েছে একটি আপার এয়ার সার্কুলেশান বা ঘূর্ণাবর্ত। আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত জন্ম নিতে পারে শনিবার। ফলে নভেম্বরে আর জাঁকিয়ে শীতের আশা নেই বলেই মনে করছেন আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা।
ঝড়, সমুদ্র
শৈত্য প্রবাহের পরিস্থিতি ছত্তীসগঢ় রাজস্থান ঝাড়খন্ড উত্তর প্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশে। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা তামিলনাডু পন্ডিচেরি করাইকালে। কেরালা লাক্ষাদ্বীপ ও কোমোরিন এলাকায় সমুদ্র উত্তাল থাকবে। সমুদ্রে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ ৪৫ থেকে ৫৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা হতে পারে। তামিলনাডু উপকূলের সমুদ্র উত্তাল থাকবে।
উত্তুরে হওয়ার বদলে দক্ষিণের উষ্ণ বাতাস
বঙ্গে বাতাসের গতিপথ পরিবর্তন। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উত্তুরে হওয়ার দাপট কমবে। প্রাধান্য পাবে দক্ষিণ পূর্বের উষ্ণ হাওয়া। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে জেলায় জেলায় যে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নীচে নেমে গিয়েছিল, তা ফের স্বাভাবিকের ঘরে পৌঁছতে পারে। পশ্চিমি শুষ্ক ও শীতল হওয়ার প্রভাব কমবে। বঙ্গোপসাগর থেকে পূবালি বাতাস ঢুকবে জলীয়বাষ্প ও গরম হওয়া নিয়ে। এর সংমিশ্রনে কোথাও কোথাও আংশিক মেঘলা আকাশ এবং তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। কুয়াশার সম্ভাবনা বাড়বে।
কলকাতায়
আগামীকাল বুধবারের মধ্যে কলকাতায় রাতের পারদ ২১ বা ২২ ডিগ্রিও ছুঁয়ে ফেলতে পারে। আজ, মঙ্গলবার রাত থেকে বাড়বে কুয়াশার সম্ভাবনা। রাতে ও ভোরে শীতের আমেজ কমবে। দিনের বেলায় উষ্ণ পরিস্থিতি। শীতের আমেজ সম্পূর্ণ গায়েব হতে চলেছে এই সপ্তাহে। বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা আগামী ৬ দিন নেই।
এবং উত্তরবঙ্গে
উত্তরবঙ্গেও আপাতত শুষ্ক আবহাওয়া। বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। স্বাভাবিকের তুলনায় তাপমাত্রা দুই থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস নিচে থাকবে। আগামী ৬/৭ দিন হালকা শীতের আমেজ চলবে। তাপমাত্রার বড় কোনো পরিবর্তন নেই।
উত্তরবঙ্গের নীচের দিকের কিছু জেলায় হওয়া বদল। তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি বাড়তে পারে। কুয়াশার সম্ভাবনা বাড়বে। মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কুয়াশার সম্ভাবনা বাড়বে উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই। বেশ কিছু জেলায় দৃশ্যমানতা ২০০ মিটার নেমে আসতে পারে। পার্বত্য জেলাগুলিতে কুয়াশার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।