বর্ধমান-হুগলির সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী দুই সেতুই বন্ধ! থমকে স্বাভাবিক জনজীবন
আনন্দবাজার | ১৮ নভেম্বর ২০২৫
আগেই বন্ধ হয়েছে কল্যাণীর ঈশ্বর গুপ্ত সেতু। এ বার ৪৫ দিনের জন্য বন্ধ নবদ্বীপের গৌরাঙ্গ সেতু! তার ফলে ভাগীরথীর দুই কূলের জেলাগুলির সঙ্গে নদিয়ার সড়ক যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন। চরম দুর্ভোগে নদিয়ার নিত্যযাত্রী থেকে ব্যবসায়ীরা। পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, বীরভূম এবং বাঁকুড়ার মতো জেলার সঙ্গে নদিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় থমকে গিয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সমস্ত ভারী যানবাহনের চালকদের ভরসা করতে হচ্ছে ভাগীরথীর ফেরিঘাটগুলির উপর। শান্তিপুরের নিকটবর্তী কালনা এবং গুপ্তিপাড়ার ফেরিঘাটগুলিতে এখন যানবাহনের দীর্ঘ সারি। মঙ্গলবার দেখা গেল ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে পণ্যবাহী ভারী থেকে হালকা যান। এমনকি আটকে পড়ে অ্যাম্বুল্যান্সও। পাশাপাশিই, একের পর এক সব্জিবোঝাই গাড়ি আটকে থাকায় জেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গৌরাঙ্গ সেতু মেরামতির জন্য নির্দেশিকা জারির পর থেকে শান্তিপুরের দু’টি ফেরিঘাটে যানবাহনের চাপ বেড়ে গিয়েছে। মূলত ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের মাধ্যমে উত্তরবঙ্গ-সহ একাধিক জেলা এবং দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম নবদ্বীপের ওই সেতুটি। এখন বিকল্প রাস্তা বলতে রয়েছে জলপথ। কিন্তু ফেরিঘাটগুলিতে প্রচণ্ড ভিড়ে নাকাল হচ্ছেন যাত্রীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘ অপেক্ষার পর গন্তব্য পৌঁছোচ্ছেন তাঁরা। যাতায়াতের সময় এবং খরচ, দুই-ই বেড়ে গিয়েছে। তেমনই সব্জিবোঝাই গাড়ি দেরিতে ঢুকছে বাজারগুলিতে। পচনশীল পণ্যের ক্ষতির আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা।
সমস্যার স্থায়ী সমাধান হিসাবে স্থানীয় বাসিন্দারা শান্তিপুরের কালনা ঘাটের উপর দিয়ে একটি নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, রাজ্য সরকার কয়েক বছর আগে ভাগীরথীর উপর সেতু তৈরির অনুমোদন দিলেও জমি সংক্রান্ত জটে প্রকল্পের কাজ শুরুই করা যায়নি। মাটি পরীক্ষার কাজ শেষ হওয়ার পরও নির্মাণকাজ থমকে গিয়েছে। বর্তমানে বর্ধমান এবং হুগলি যাতায়াতের জন্য একমাত্র ভরসা নবদ্বীপের গৌরাঙ্গ সেতুও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হয়রানি চরমে উঠেছে।