• হিদমার গতিবিধির খবর দিয়েছিল কিষেণজির ভাই বেণুগোপাল রাও
    বর্তমান | ১৯ নভেম্বর ২০২৫
  • অমরাবতী: ১৯৮১ সালে সুকমায় জন্ম। পূবর্তী নামে ছোট্ট গাঁয়ে বেড়ে ওঠা। মাদভি হিদমা তখন স্কুলে। অভাব-অনটন, খাবার থেকে জলের সমস্যা। নিত্যদিন এসব নিয়েই কেটে যেত জীবন। সেইসময় তার গ্রামে একটি পুকুর তৈরি করে দিয়েছিল মাওবাদীরা। সেই থেকে ভালোলাগা শুরু। দশম শ্রেণির পাঠ চুকিয়ে স্থানীয় মাওবাদী সংগঠনে নাম লেখায় কিশোর মাদভি। সময়ের ফেরে অবুঝমাড়, সুকমা ও বিজাপুরের ত্রাস হয়ে ওঠে। ক্ষুরধার বুদ্ধি, স্ট্রং নেটওয়ার্ক আর সাংগঠনিক দক্ষতা অল্পদিনেই সংগঠনের শীর্ষ স্তরে পৌঁছে দেয় তাঁকে। মঙ্গলবার এনকাউন্টারে প্রাণ হারিয়েছেন হিদমা। সূত্রের খবর, তাঁর গতিবিধির হদিশ দিয়েছিলেন কিষেণজির ভাই মাল্লোজুলা বেণুগোপাল রাও ও ওয়াম লাখমু। 

    শুরুর দিকে হিদমার মেন্টর ছিলেন রমেশ পুড়িয়ামি ওরফে বড়ারান্না। বতর্মানে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘ও ছিল ইয়ং রেবেল। তখন অল্প বয়স। ও নিজেই বলেছিল, দলে যোগ দিতে চাই। ওর উৎসাহ আর দৃঢ় প্রতিজ্ঞ চোখ দেখে রাজি হয়ে যাই। প্রথমে দু’বছর আমার অধীনেই কাজ করেছিল। তারপর ধীরে ধীরে সংগঠনের উচ্চস্তরে পৌঁছে যায়।’

    কম সময়ে পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মির ১ নম্বর ব্যাটালিয়নের প্রধানের দায়িত্ব পড়ে হিদমার কাঁধে। কখনও হিদমালু, কখনও সন্তোষ ছদ্মনামে দাপিয়ে বেড়ান ছত্তিশগড়-অন্ধপ্রদেশজুড়ে। দক্ষতাকে হাতিয়ায় করেই সেন্ট্রাল কমিটির সদস্য হন। এরপর একের পর এক অপারেশন। ২০১০ সালে দান্তেওয়াড়ায় ৭৬ সিআরপিএফের মৃত্যুর মাস্টারমাইন্ড ছিলেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বেই ২০১৩ সালে হামলা চালায় মাওবাদীরা। ঝিরাম ঘাঁটিতে প্রাণ হারান কংগ্রেস নেতা সহ ২৭ জন। ২০১৭ সালে সুকমা, ২০২১ সালে বিজাপুর। তালিকাটা দীর্ঘ। কিন্তু শেষমেশ সংগঠনের একসময়ের ঘনিষ্ঠরাই তাঁর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াল। 

    মাদভির মৃত্যুতে প্রায় শেষের পথে মাওবাদী সাম্রাজ্য। দুই বড় মাথা শুধু জীবিত। পলিটব্যুরো নেতা থিপ্পিরি তিরুপতি ওরফে দেবুজি ও ইস্টার্ন রিজিওনাল ব্যুরোর প্রধান মিসির বেসরা ওরফে সাগর।
  • Link to this news (বর্তমান)