আজ থেকে প্রাথমিকের নিয়োগ, এসএসসির বাংলা-ইংরেজির ইন্টারভিউ শুরু ২৬শে
বর্তমান | ১৯ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আজ, বুধবার থেকে চালু হচ্ছে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক নিয়োগের আবেদন পোর্টাল। টেট পাশ এবং অন্যান্য যোগ্যতামানে উত্তীর্ণ প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এক্স হ্যান্ডলে জানিয়েছেন, ‘আগামীকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ তাদের অনলাইন পোর্টাল উন্মুক্ত করতে চলেছে, যেখানে টেট উত্তীর্ণ যোগ্য প্রার্থীরা সরকার অনুমোদিত ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রাপ্ত প্রাথমিক ও জুনিয়র বেসিক বিদ্যালয়গুলিতে সহকারী শিক্ষক পদের জন্য আবেদন জানাতে সক্ষম হবেন।’ এই স্তরে মোট ১৩ হাজার ৪২১টি শূন্যপদ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের টেট-এর ভিত্তিতে ২০২৪ সালে শেষ বার প্রায় সাড়ে ন’হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল। তারপরে টেট ২০২২ এবং টেট ২০২৩-এর ফল প্রকাশিত হয়েছে। টেট ২০২২-এ উত্তীর্ণের সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ৫৪ হাজার হলেও ডিএলএডের পরিবর্তে বিএড থাকার কারণে ৯৭ হাজার প্রার্থীর বৈধতা বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট। ফলে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৫৭ হাজার। টেট ২০২৩-এ উত্তীর্ণ হয়েছেন ৬ হাজার ৭৫৪ জন। এই দু’টি এবং আগের টেট মিলিয়ে নতুন চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা ৭০ হাজারের আশপাশে থাকতে পারে বলেই ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের। তবে অনেক কর্মরত শিক্ষকও আবেদন জানাতে পারেন। সেক্ষেত্রে আবেদনকারীর সংখ্যা কিছুটা বাড়বে। পর্ষদ সূত্রে খবর, প্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ের জন্য ঢেলে সাজা হচ্ছে একটি হলঘর। কিছুদিনের মধ্যে সেটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে।
এদিকে, মঙ্গলবার এসএসসি জানিয়েছে, ২৬ নভেম্বর থেকে বাংলা এবং ইংরেজি বিষয়ের ইন্টারভিউ শুরু হবে। এদিন থেকে শুরু হয়েছে ইন্টারভিউয়ে ডাক পাওয়ার আগে প্রার্থীদের তথ্য যাচাই। প্রথম দিন উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বাংলা বিষয়ের প্রায় ৭১০ জন প্রার্থীকে ডাকা হয়েছিল। অনুপস্থিতি ছিলেন ছ’জন। যোগ্যতা সংক্রান্ত ভুল দাবি করায় তাঁরা আর ভেরিফিকেশনে হাজির হননি বলে জল্পনা চলছে। এসএসসি’র নতুন ভবনে এই প্রক্রিয়া চলে। মুর্শিদাবাদের বিশেষভাবে সক্ষম চাকরিপ্রার্থী সনৎ পাল এসেছিলেন লাঠিতে ভর দিয়ে। সন্তান কোলে নিয়ে এসেছিলেন পিয়ালি ঘোষ, সুপর্ণা পালরা। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায়ও এসেছিলেন অনেকে। সেই ভিড়ে চাকরিহারাদের পাশাপাশি ছিলেন নতুন প্রার্থীরা। নতুন প্রার্থীদের প্রশ্ন, যে প্যানেল বাতিলই হয়ে গিয়েছে, সেই চাকরির অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কেন ১০ নম্বর দেওয়া হবে? ইন্টারভিউতে ডেমো ক্লাসের জন্যও ১০ নম্বর বরাদ্দ রয়েছে। নতুনদের অনেকেই এখানে পিছিয়ে যাবে। এই প্রশ্নেই এদিন হাইকোর্টে দু’টি মামলা দায়ের হয়েছে। স্বীকৃত বেসরকারি স্কুলশিক্ষকরাও অতিরিক্ত ১০ নম্বর পাওয়ার দাবি করেছেন মামলায়। অন্যদিকে নিয়ম না থাকলেও পার্ট টাইম শিক্ষকরাও অনেকেই ওই নম্বর পেয়ে গিয়েছেন বলে অন্য মামলায় দাবি।
শ্রীরামপুর গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা অবিরা দাস বলেন, ‘নতুনদের জন্য সহানুভূতি রয়েছে। তবে এই নম্বর যে দেওয়া হবে, তা তো তাঁরা আগে থেকেই জানতেন।’ এদিন যোগ্য চাকরিহারাদের তরফেও একটি বিশাল মিছিল হয় করুণাময়ীতে। শূন্যপদ বৃদ্ধি করে সমস্ত চাকরিহারার চাকরি সুনিশ্চিত করার দাবি ওঠে সেখানে। সূত্রের খবর, সোমবার নতুন প্রার্থীদের মিছিল ও অবস্থানের পাল্টা হিসেবেই এই উদ্যোগ।