• ইনিউমারেশন ফর্মের সব তথ্য উঠছে না সার্ভারে, বিএলও অ্যাপের সমস্যা! এসআইআর নিয়ে নয়া আশঙ্কায় ভোটাররা
    বর্তমান | ১৯ নভেম্বর ২০২৫
  • শুভঙ্কর বসু ও সোহম কর, কলকাতা: ইনিউমারেশন ফর্মে ভোটারের পূরণ করা সব তথ্য উঠছে না সার্ভারে। কারণ, ‘বিএলও অ্যাপ’-এ যাবতীয় তথ্য আপলোড করার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করেনি নির্বাচন কমিশন। আর তাই সময় বাঁচাতে সমস্ত তথ্য না দিয়েই ফর্ম ডিজিটাইজেশন করছেন বিএলও-রা। এমনকি, ইআরও এবং এইআরওদের তরফে এমন নির্দেশই দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তাহলে ইনিউমারেশন ফর্মে ভোটারদের কাছে এত তথ্য চাওয়া হল কেন? সেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। 

    আগে থেকে ছাপানো ইনিউমারেশন ফর্মে নির্বাচকের নাম, এপিক নম্বর, ঠিকানা, ক্রমিক সংখ্যা, অংশ নম্বর, বিধানসভা এবং রাজ্যের নাম দেওয়া ছিল। ওই ফর্মে ভোটারকে নিজের জন্ম তারিখ, অধার নম্বর (ঐচ্ছিক অর্থাৎ না দিলেও চলবে), মোবাইল নম্বর, পিতার বা অভিভাবকের নাম এবং তাঁর এপিক নম্বর (যদি থাকে) পূরণ করতে হচ্ছে। এছাড়াও ফর্মে লিখতে হচ্ছে ভোটারের মায়ের নাম, এপিক নম্বর (যদি থাকে), স্বামী বা স্ত্রীর নাম ও এপিক নম্বর (যদি থাকে)। কিন্তু ঘটনা হল এত সব কিছুর পরও ভোটারদের দেওয়া সেই সমস্ত তথ্য উঠছেই না সার্ভারে। কারণ, অ্যাপেই এই সমস্ত তথ্য না তোলার সুবিধা দেওয়া হয়েছে বিএলওদের।

    জানা গিয়েছে, কোনও ভোটারের জমা করা ফর্মের ছবি সার্ভারে আপলোডের পর সেটি মিলিয়ে দেখছেন বিএলও-রা। তবে জন্ম তারিখ, আধার নম্বর, মোবাইল নম্বর, বাবা-মায়ের এপিক নম্বর এবং স্বামী বা স্ত্রীর নাম-এপিক নম্বরের তথ্য না দিয়েই ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়া শেষ করার সংস্থান রয়েছে বিএলও আ্যাপে। শুধু সংশ্লিষ্ট ভোটারের বাবা এবং মায়ের নাম দিলেই হবে। সূত্রের খবর, সময় বাঁচাতে বিএলও-রা ভোটারদের দেওয়া এইসব তথ্য না দিয়েই ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছেন। ইআরও এবং এইআরওদের তরফে এমনটা করারই নির্দেশ আসছে। কারণ, মৌখিকভাবে বিএলওদের ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়া শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কোনও জেলায় ২৬ তারিখের মধ্যে প্রক্রিয়া শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোথাও আবার বলা হয়েছে, ২৮ তারিখের মধ্যে প্রক্রিয়া শেষ করতেই হবে। ফলে ভোটারদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে নয়া আতঙ্ক। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠছে, এসব তথ্য ছাড়াই যদি ডিজিটাইজেশনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়, তাহলে ইনিউমারেশন ফর্মে এত তথ্য চেয়ে ভোটারদের হয়রান করা হল কেন? 

    পূরণ করা ইনিউমারেশন ফর্ম অ্যাপে আপলোড করতে গিয়ে অবশ্য যথেষ্ট নাকানিচোবানি খাচ্ছেন বিএলওরা। যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্রে কর্মরত এক বিএলও, পেশায় অঙ্কের শিক্ষক প্রশান্ত চৌধুরী একেবারে অ্যাপ খুলে দেখালেন, ২০০২ সালের তথ্য সেখানে দেওয়া মাত্র দেখাচ্ছে ‘নো রেকর্ডস ফাউন্ড’। এদিকে ২০০২ সালের তালিকায় ওই ভোটারের নাম জ্বলজ্বল করছে। প্রশান্তবাবু বলেন, ‘হাই স্পিড ইন্টারনেটের জন্য অতিরিক্ত টাকা দিয়ে বাড়ির ওয়াই-ফাই রিচার্জ করলাম। তাতেও হাল যে কে সেই! অনেক সময়েই অ্যাপে তথ্য আপলোড করার সময় ‘লোডিং’ হয়েই চলেছে।’ অগত্যা কোনও উপায় না দেখে সুপারভাইজারদের বারবার প্রশ্ন করছেন বিএলওরা। আবার প্রতিটি পার্টে তালিকায় থাকা সব ভোটারদের ঠিকানাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএলও-র কথায়, ‘ঠিকানায় গিয়ে দেখছি, সেই বাড়িটাই নেই। সেখানে ফ্ল্যাটবাড়ি উঠে গিয়েছে। আশপাশের বাড়ির লোকজন বলছেন, ওই নামে তাঁরা কাউকে চেনেন না।’ কমিশন অবশ্য সমস্যা নিরসনে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে একটি নির্দিষ্ট ভার্সন ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে বিএলওদের। 
  • Link to this news (বর্তমান)