কাজের প্রলোভনে সাড়া দিয়ে ভারতে! বাংলাদেশি দম্পতির সর্বস্ব লুট করে চম্পট দিল দালাল
প্রতিদিন | ১৯ নভেম্বর ২০২৫
রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: বাংলাদেশে কাজ করে সংসার চালাতে পাচ্ছিল না দম্পতি! কোনও এক দালাল জানিয়েছিল সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে গেলে কাজ পাওয়া যাবে! শুধু তাই নয়, এপারে গাড়ির চালকের কাজ পাইয়ে দেওয়া হয়ে সংসারের কর্তাকে! সেই মতো তিন বছরের শিশুকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ করে ওই দম্পতি। সীমান্ত পেরনো ও কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য দালালকে দেওয়া হয়েছিল ২০ হাজার টাকা। অভিযোগ, এপারে এনে দম্পতিকে নদীর ধারে বসিয়ে রেখে টাকা নিয়ে চম্পট দেয় ওই দালাল। বিপদ বুঝে বাড়ি ফেরার জন্য নদিয়ার তেহট্টের সীমান্ত এলাকায় ঘোরাফেরা করছিল ওই পরিবার। পরে ওই পরিবারকে আটক করে পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দম্পতির নাম রমজান খান ও রুমানা খাতুন। মঙ্গলবার তাঁদের তেহট্ট ছিন্নমস্তা মন্দির এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। তেহট্ট থানায় যাওয়ার চেষ্টা করছিল বলে খবর। স্থানীয়রা রমজানের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, তাঁরা বাংলাদেশি। এরপর খবর দেওয়া হয় তেহট্ট থানায়। পুলিশ এসে তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বর্তমানে ওই দম্পতি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
রমজানরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি এক দালালের খপ্পরে পরে তাঁরা। ভারতে নিয়ে গিয়ে বেশি বেতনে গাড়ি চালকের কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা জানায় সেই দালাল। সংসার ভালোভাবে সামলাতে ওই কথায় রাজি হয়ে যান রমজান। এরপর ভারতে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক কষ্টে ২০ হাজার টাকা সেই দালালকে দেওয়া হয়। রবিবার রাতে কোনও এক জায়গার সীমান্ত পেরিয়ে ওই দালাল তাঁদের ভারতে এনেছিল। দালালের সঙ্গেই তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করেন। পরে সোমবার রাতে কোনও একটি নদীর ধারে ওই পরিবারকে বসিয়ে দালাল খাবার আনার কথা বলে চম্পট দেয় বলে অভিযোগ। সারা রাত ওই দম্পতি সেখানে অপেক্ষা করেছিল। পরে বুঝতে পারেন, আর দালাল আসবে না। গতকাল, স্থানীয় থানায় যাওয়ার সন্ধানে রাস্তায় তাঁরা ঘোরাঘুরি করতে থাকেন। পরে স্থানীয়রা সব বিষয়টি জানতে পেরে থানায় খবর দেয়।
রমজান আক্ষেপ করে বলেন, “দালালকে চিনি না। তবে বেকায়দায় পড়েছি। পুলিশের কাছে সব স্বীকার করে দেশে ফিরতে চাই। তাই থানার খোঁজ করছিলাম।” পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আপাতত তাঁদের আটক করা হয়েছে। তাঁরা বাংলাদেশে ফিরে যেতে চান। তাই বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। বিএসএফের মাধ্যমে পুশব্যাক করা যায় কিনা আলোচনার চেষ্টা চলছে।