• সুশান্তের ‘অশান্ত রূপে’ জড়সড় বিডিও! আলিপুরদুয়ারের সাংসদের পরে বিতর্কে খানাকুলের বিধায়ক
    আনন্দবাজার | ১৯ নভেম্বর ২০২৫
  • ‘বিডিও চোর’, ‘বিডিও-র কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’— এমনই সমস্ত স্লোগান দিতে দিতে একদল কর্মীকে নিয়ে তাঁর অফিসে ঢুকলেন বিজেপি বিধায়ক। চিৎকার-চেঁচামেচি করে তিনি বিডিও-র বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেই উত্তেজিত হয়ে টেবিল চাপড়ে তা অস্বীকার করলেন বিডিও। পাল্টা টেবিল চাপড়ে বিডিও-র দিকে আঙুল তুলে চেঁচামেচি করলেন বিধায়ক। সঙ্গ দিলেন তাঁর সমর্থকেরা। মঙ্গলবার বিকেলে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতর হুগলির খানাকুলে। বিজেপি বিধায়কের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলল তৃণমূল। পাল্টা শাসকদলের অঙ্গুলিহেলনে প্রশাসনিক কর্তারা কাজ করছেন বলে অভিযোগ করল বিজেপি।

    ঘটনার সূত্রপাত দিনকয়েক আগে। খানাকুলের ঠাকুরানিচক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দেদার গাছ কাটার অভিযোগ ওঠে। তাতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজেপির অঞ্চল প্রতিনিধিদের কাঠগড়ায় তোলা হয়। আঙুল ওঠে বিজেপির পঞ্চায়েতপ্রধানের দিকেও।

    তারই প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিডিওর কাছে ডেপুটেশন জমা দিতে গিয়ে তাঁর চেম্বারে ঢুকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল খানাকুলের বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ এবং তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। বিডিও অফিসে এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয় যে বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায় নিজের চেম্বারে জড়সড় হয়ে পড়েন। তার ঠিক আগেই এলাকায় বড়সড় মিছিল করে ওই বিডিওকে ‘তৃণমূলের দালাল’ বলেও কটাক্ষ করেন বিজেপি বিধায়ক। তাঁর দাবি, তৃণমূলের সঙ্গে বিডিও যুক্ত হয়ে ওই সরকারি গাছগুলি কেটেছেন। এখন বিজেপির পঞ্চায়েতপ্রধানকে দায়ী করা হচ্ছে কোণঠাসা করার জন্য।

    খানাকুল-১ নম্বর বিডিও অফিস এলাকায় ওই শোরগোল নিয়ে বিডিও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে তৃণমূলের অভিযোগ, জনপ্রতিনিধি হিসাবে সুশান্ত এক জন আমলার সঙ্গে যে ব্যবহার করেছেন, তা নিন্দাজনক। উল্লেখ্য, গত ৭ নভেম্বর পঞ্চায়েতপ্রধান রামকৃষ্ণ মাইতির বিরুদ্ধে খানাকুল থানায় অভিযোগ দায়ের করে আরামবাগ বন দফতর। তার পরেই এই বিক্ষোভের ঘটনা।

    দিনকয়েক আগে একই রকমের ঘটনা ঘটেছিল উত্তরবঙ্গে। ত্রাণ দিতে পক্ষপাতিত্ব করছেন বিডিও, এই অভিযোগ তুলে মাদারিহাট বিডিও অফিসে ঢুকে বিডিও-র টেবিল চাপড়ে তাঁকে তিরস্কার করেন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ মনোজ টিগ্গা। হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ‘‘বিডিও হিসাবে কাজ করতে চাইলে বিডিও হয়ে কাজ করুন। তৃণমূল করতে চাইলে তৃণমূলের পতাকা হাতে নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন।’’ সেই ঘটনা নিয়ে জোর চাপানউতরের মধ্যে হুগলির ঘটনাতেও শোরগোল শুরু হয়েছে। আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি রমেন্দ্র সিংহ রায় বলেন, ‘‘বিজেপি একটি বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক দল। সরকারি অফিসে ঢুকে এমন কাণ্ড ঘটাচ্ছেন কিনা একজন বিধায়ক! খানাকুল-১ ব্লকের ঠাকুরানিচক পঞ্চায়েতের শতাধিক গাছ বেআইনি ভাবে কাটা হয়েছে। সেটা জানতে পেরে বন দফতর অভিযোগ দায়ের করেছে। তাই নিয়ে বিধায়ক বিডিও অফিসে গিয়ে হুজ্জতি করেছেন। আসলে প্রধান যদি গ্রেফতার হন, তা-হলে তিনি বিধায়কের নামও বলে দিতে পারেন। এই আশঙ্কায় এই কাজ করেছেন বিধায়ক।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)