• এবার মালবাজারে 'কাজের অসহ্য চাপে' চরম পদক্ষপ মহিলা BLO-র, মুখ খুললেন ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী...
    ২৪ ঘন্টা | ১৯ নভেম্বর ২০২৫
  • অরূপ বসাক: মালবাজারে আত্মঘাতী এক আইসিডিএস কর্মী। তিনি আবার বিএলও হিসেবেও কাজ করছিলেন। মাল বিধানসভার ১০১ নম্বর বুথের বিএলও-র দায়িত্ব পেয়েছিলেন আইসিডিএস কর্মী শান্তি মনি। পরিবারের দাবি SIR-এ কাজের চাপ সামলাতে না পেরে আত্মঘাতী হয়েছেন শান্তি। এনিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

    এসআইএর কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে দেখা যাচ্ছে বহু বিএলও প্রবল কাজের চাপের অভিযোগ করছেন। অনেক প্রশাসনের কর্তাব্যক্তির সামনে ভেঙেও পড়ছেন।  শান্তি মনির পরিবারের দাবি, এসআইআর এর কাজ নিয়ে বেশ মানসিক চাপে ভুগছিলেন শান্তি মনি। এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দা হিন্দিভাষী। এনিয়ে নিয়মিত তাঁকে সমস্যার সম্মুখীন হতে হত। সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি ঘুরে এসে সন্ধেয় ফিরে ভেঙে পড়তেন শান্তি। এমনটাই জানিয়েছেন শান্তির স্বামীও।

    শান্তির স্বামীর আরও অভিযোগ, ভাষাগত সমস্যার কারণে তাকে ঘিরে ধরে ভোটার তালিকায় নাম তোলার বিষয়ে প্রতিনিয়ত প্রশ্ন করা হত। এতে তার মাথায় প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হতো। পরিস্থিতিতে বিরক্ত হয়ে তিনি ব্লক প্রশাসনের কাছে পদত্যাগপত্রও জমা দিয়েছিলেন। তবে বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ তা গ্রহণ না করে তাকে কাজ চালিয়ে যেতে উৎসাহ দেন।

    শান্তির মৃত্যু নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, আমি মর্মাহত। আজও জলপাইগুড়িতে আমরা এক বুথ লেভেল অফিসারকে হারালাম। একজন অঙ্গনওয়াড়ী কর্মী এসআইআর এর কাজের চাপ না নিতে পেরে আত্মঘাতী হলেন। এসআইআর যখন থেকে শুরু হয়েছে তখন থেকে মোট ২৮ জন মারা গেলেন। কেউ কেউ আতঙ্কে, কেউ আবার মানসিক চাপ বা কাজের চাপে। কিছু অমূল্য প্রাণ চলে গেল নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনাহীন, বিপুল কাজ চাপিয়ে দেওয়ার জন্য। একসময় যে কাজটা ৩ বছরে করা হয়েছিল তা এখন করা হচ্ছে মাত্র ২ মাসে। এর ফলে বিএলওদের উপরে অমানুষিক চাপ তৈরি হয়েছে। 

    শান্তি মনির মৃত্যু খবর পেয়ে স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী বুলু চিক্‌ বরাইক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিবারের প্রতি শোকপ্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন খুব কম সময়ের মধ্যে বিপুল কাজ শেষ করার যে চাপ দিয়েছে, তা বি.এল.ওদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলছে।”

    এদিকে পুলিস ঘটনাস্থল থেকে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, অতিরিক্ত কাজের চাপ ও ভাষাগত সমস্যার কারণে এমন ঘটনা আর যেন না ঘটে সে ব্যাপারে প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)