‘ভোটে না লড়া ভুল ছিল’, বিহারে বিশ্রী ফলের পর ‘স্বীকারোক্তি’ পিকের
প্রতিদিন | ১৯ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনীতিতে প্রশান্ত কিশোর পা রেখেছিলেন রীতিমতো ধুমধাম করে। ভোটকুশলী হিসাবে প্রায় সব রাজ্যে সাফল্য। বিহারে তৃণমূল স্তরে নেমে কাজ করার লক্ষ্যে পদযাত্রা। প্রায় ৩ বছর বিহারের গ্রামে গ্রামে ঘোরা। রীতিমতো কর্পোরেট ভঙ্গিমায় দল ঘোষণা। কোটি কোটি টাকা খরচ করে সভা-সমিতি করা। প্রচারে আলাদা করে পেশাদারদের ব্যবহার। ভিনরাজ্যের পরিযায়ী বিহারীদের জন্যও আলাদা করে কর্পোরেট দল তৈরি করে প্রচার করা। এবং সর্বোপরি সোশাল মিডিয়ায় হইচই। কিন্তু এত কিছুর পরও নিট ফল শূন্য। কোনও আসন জোটেনি। ভোটের হারও উল্লেখযোগ্য কিছু নয়। মোটে ৪ শতাংশ।
এনডিএ বনাম মহাজোটের চিরাচারিত লড়াইয়ে বিহারের রাজনীতিতে তৃতীয় বিকল্প হিসাবে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করেন পিকে। তাঁর জন সুরাজ পার্টি জাতপাতের রাজনীতিতে ক্লিষ্ট বিহারে নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখায়। কিন্তু সেই সবটাই সোশাল মিডিয়া এবং সংবাদমাধ্যমে। বিহারের ভোটপ্রচারে গুচ্ছ গুচ্ছ ভুল করে গিয়েছেন তিনি। প্রথমে ঘোষণা করেছিলেন, অন্য দলের কাউকে নেবেন না। ঘোষণা করেছিলেন, দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কাউকে টিকিট দেবেন না। ঘোষণা করেছিলেন, দলের প্রথম সভাপতি দলিত হবে। কোনওটিই তিনি মানেননি। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় ভুল সম্ভবত নিজের ভোটে না লড়া। যে প্রশান্ত কিশোর বঙ্গে মমতাকে জেতাতে নন্দীগ্রামের মতো কঠিন আসনে লড়াই করার পরামর্শ দেন, যে প্রশান্ত কিশোর সবসময় দলের শীর্ষনেতাদের ভোটে লড়াই করার পক্ষে মত দেন, তিনি নিজে ঠিক কীসের ভয়ে ভোটে লড়লেন না, সেটা তিনিই জানেন। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত যে তাঁর দলের আসন জয়ের যেটুকু সম্ভাবনা ছিল, সেটাকেও ধূলিসাৎ করে দিয়েছে তা ভোটের ফলেই স্পষ্ট।
ভুল যে হয়েছিল, সেটা ভোটের ফলের পর স্বীকার করলেন প্রশান্ত কিশোর। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পিকে বলেছেন, “এটাকে আপনি ভুল হিসাবে ধরতেই পারেন।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “সাংসদ-বিধায়ক হওয়া আমার উদ্দেশ্য নয়। সেটা হওয়ার হলে এত ঝুঁকি নিয়ে আমার টাকা পয়সা, খ্যাতি সবটা বিলিয়ে বিহারে ভোটপ্রচার করতাম না। এগুলো ব্যবহার করে সাংসদ-বিধায়ক হতাম।”
এতদিন অবশ্য ভোটে না লড়াটাকে ভুল হিসাবে মানতে চাইছিলেন না প্রশান্ত। আসলে ভোটকুশলী হিসাবে কৌশল তৈরির সময় যে ভুলগুলো ধরা যায়, বা পরামর্শ দেওয়া যায়, সেটা বোধ হয় নেতা হিসাবে পথে নেমে করার সময় ধরাটা কঠিন। নাহলে প্রশান্ত এত ভুল করবেন কেন?