• মোড়লদের নির্দেশে ‘একঘরে’, প্রৌঢ়ের শেষযাত্রায় কাঁধ দিলেন পাশের গ্রামের মুসলিম যুবকরা
    প্রতিদিন | ১৯ নভেম্বর ২০২৫
  • স্টাফ রিপোর্টার, মালদহ: মরণের পরও ‘একঘরে’, ‘সমাজচ্যুত’! সিভিক ভলান্টিয়ারের বাবার শ্মশানযাত্রায় এলেন না গ্রামের কেউই। তবে এগিয়ে আসেন পার্শ্ববর্তী গ্রামের কিছু মুসলিম সম্প্রদায়ের যুবক-সহ কয়েকজন। তাঁরাই কাঁধ দেন প্রৌঢ়কে।

    মঙ্গলবার এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থাকল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের মুকুন্দপুর গ্রাম। অভিযোগ, জমি নিয়ে বিবাদের জেরে কিছু মাতব্বরের নিদানে সপরিবারে ‘একঘরে’ হয়ে রয়েছেন সিভিক ভলান্টিয়ার কিশোর দাস। এদিন তাঁর বাবা টুপন দাস মারা যান। কিন্তু এই ‘নিদানে’র কারণেই গ্রামের কেউ এগিয়ে আসেননি। একথা শুনে এগিয়ে আসেন অন্য গ্রামের কিছু মুসলিম-সহ কয়েকজন। তাঁরা দেহ শ্মশানে নিয়ে গিয়ে দাহ করেন।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, টুপন দাসের সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজনের বিবাদ চলছিল। অভিযোগ, টুপনবাবুর বাড়ির সামনের খাস জায়গা ওই কয়েকজন অবৈধভাবে দখল করার চেষ্টা করছিল। এনিয়ে বচসা, মারপিট হয়েছে। দখলকারীদের বিরুদ্ধে বহুবার ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের পরিবার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা, মহকুমা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানায়। কিন্তু সুরাহা হয়নি। উলটে তাঁদের একঘরে করে দেওয়া হয়। জমি বিবাদ সংক্রান্ত বিষয়টিতে পুলিশের বিরুদ্ধেও ক্ষোভে সরব হয়েছেন টুপনবাবুর ছেলে পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার কিশোর দাস।

    কিশোরের অভিযোগ, জমি বিবাদের কারণে প্রতিবেশীরা তাঁদের ‘একঘরে’ করে রেখেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁর বাবা। মঙ্গলবার তাঁর মৃত্যু হয়। কিন্তু শবদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রতিবেশীরা কেউ আসেননি। তাঁরা অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। ঘটনাটি জানতে পেরে পার্শ্ববর্তী কিছু মুসলিম সম্প্রদায়ের যুবক-সহ কয়েকজন এগিয়ে আসেন। তাঁদের কাঁধেই শেষযাত্রায় পাড়ি দেন তাঁর বাবা।
  • Link to this news (প্রতিদিন)