• সরকারি নথিতে ভুল তথ্য, আতঙ্কে আত্মঘাতী বাদুড়িয়ার প্রৌঢ়
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২০ নভেম্বর ২০২৫
  • এসআইআর আতঙ্কে ফের মৃত্যুর অভিযোগ উঠল রাজ্যে। এবার ঘটনাস্থল উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, সরকারি নথিতে ভুল থাকায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন ওই প্রৌঢ়। সমস্যা সমাধানের জন্য অনেক ছোটাছুটিও করেছিলেন। কিন্তু কাজ হয়নি। এই আতঙ্কে ৫–৬ দিন ধরে খাওয়া–দাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার তিনি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন বলে দাবি পরিবারের। বুধবার তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বসিরহাট মর্গে নিয়ে যায় পুলিশ। এসআইআরের কাজের চাপে রাজ্যের এক বিএলও আত্মহত্যা করেন। বুধবার তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এসআইআরের জন্য রাজ্যে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় নির্বাচন কমিশনকে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সকালে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে তিনি জানিয়েছেন, ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের জন্য রাজ্যে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

    বাদুড়িয়ার মৃত প্রৌঢ়ের নাম শফিকুল মণ্ডল (৫৭)। তাঁর বাড়ি বাদুড়িয়ার যদুরহাটি এলাকায়। পরিবারের দাবি, কয়েক পুরুষ ধরে তাঁরা বাদুড়িয়া বসবাস করছেন। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর শফিকুল দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর পরিচয়পত্রে যে বয়স লেখা আছে তার ব্যবধান প্রথম পক্ষের সন্তানদের থেকে কম। সরকারি নথিতে এই ভুল থাকায় আতঙ্কে ছিলেন শফিকুল। কীভাবে ভুল নথি ঠিক করবেন তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না তিনি। অনেকে তাঁকে ডিটেনশন ক্যাম্পে চলে যেতে হবে বলে ভয়ও দেখিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার পরিবারের সকলের নজর এড়িয়ে বাড়ির অদূরে একটি নির্জন জায়গায় গিয়ে বিষ খান শফিকুল। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে বাদুড়িয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

    শফিকুলের ছেলে রুহুল আমিন মণ্ডল জানিয়েছেন, নথির ভুল সংশোধনের জন্য ১৫ দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করছিলেন বাবা। গত কয়েক দিন ধরে খাবারও খাচ্ছিলেন না। অনেক বোঝানোর পরেও আতঙ্ক কাটছিল না তাঁর। এদিন খবর পেয়ে মৃতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে যান বাদুড়িয়ার তৃণমূল বিধায়ক কাজি আবদুর রহিম দিলু।। তাঁদের অভিযোগ, বিজেপি এসআইআরের মাধ্যমে ভয় এবং আতঙ্কের আবহ তৈরি করেছে। এই মৃত্যুগুলির দায় তাদেরই। যদিও বিজেপির দাবি, এসআইআর নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)