• আধুনিক সমাজে এসব হয় কীভাবে? নতুন তিন তালাক মামলায় ক্ষোভপ্রকাশ সুপ্রিম কোর্টের
    প্রতিদিন | ২০ নভেম্বর ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাৎক্ষনিক তিন তালাক সেই ৭ বছর আগেই অসাংবিধানিক হিসাবে ঘোষিত হয়েছে। এবার তিন তালাকেরই আরেক রীতি তালাক-এ-হাসান নিয়ে প্রবল আপত্তি জানাল দেশের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন, আধুনিক সমাজে এসব চলছে কীভাবে?

    ইসলামে স্ত্রী-র সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের একাধিক পদ্ধতি রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম তালাক-এ-বিদ্দাত বা তাৎক্ষণিক তিন তালাক। এই পদ্ধতিতে পরপর ৩ বার তালাক বললেই বিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়। তবে এই রীতির বেলাগাম অপব্যবহারের জেরে মামলা দায়ের হয়েছিল আদালতে। ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের ৫ সদস্যের বেঞ্চ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় এই রীতি সম্পূর্ণরূপে অসাংবিধানিক। ২০১৯ সালে সংসদে পাশ হয় এই সংক্রান্ত আইন মুসলিম মহিলা (বিবাহ অধিকার সংরক্ষণ)। যার মাধ্যমে এই রীতিকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং অপরাধীকে ৩ বছর সাজার বিধান দেওয়া রয়েছে।

    এ ছাড়া আর একটি রীতি রয়েছে তালাক-এ-হাসান। এই পদ্ধতিতে পরপর ৩ মাস তিনবার তালাক দিতে হয় স্ত্রীকে। এবং এ ক্ষেত্রে স্বামী নিজের মুখে তালাক না বলে অন্য কারও মারফৎও স্ত্রীকে তালাকনামা পাঠাতে পারেন। এই তালাকের পদ্ধতির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। এক মহিলাও স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। বেনাজির হীনা নামের ওই সাংবাদিকের অভিযোগ ছিল, তাঁর স্বামী আইনজীবী মারফৎ তাঁকে তালাকনামা পাঠিয়েছেন। তাতে স্বামীর সই পর্যন্ত নেই। যে কারণে তিনি নতুন করে বিয়েও করতে পারছেন না। এখনও যদি তিনি এই তালাকের কথা অস্বীকার করেন, তাহলে বহুবিবাহ মামলায় তিনি দোষী হয়ে যাবেন।

    মহিলার অভিযোগ শুনে ক্ষোভপ্রকাশ করে বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়া এবং বিচারপতি এনকে সিংয়ের ডিভিশন বেঞ্চ। শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন, “আজকের আধুনিক সমাজে এটা কী করে চলতে পারে? এটাই কি মহিলাদের সম্মান? স্বামীর এত ইগো যে নিজের মুখে তালাকটাও দিতে পারছেন না?” তবে তিন তালাকের মতো এই প্রথা পুরোপুরি বাতিলের পথে নয় সুপ্রিম কোর্ট। বরং এই পদ্ধতিকে খানিকটা উন্নততর করা যায় কিনা, সেটা নিয়ে সব পক্ষের মতামত জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত।
  • Link to this news (প্রতিদিন)