টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেতে ভোগান্তির দিন শেষ। এবার অনলাইনেই মিলবে রিপোর্ট। একেবারে বাড়িতে বসেই এক ক্লিকে ডাউনলোড করা যাবে সেই রিপোর্ট। প্রয়োজন শুধু একটি মাত্র ওটিপির। ইতিমধ্যে বারুইপুর, বারাকপুরে এই পরিষেবা শুরু হয়েছে। এবার বাঁকুড়াতেও মিলবে এই পরিষেবা। এতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন বলে মনে করছেন আধিকারিকরা। শুধু তাই নয়, জেলার ময়নাতদন্তের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিনির্ভর এই পরিষেবা নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল বলেও মনে করা হচ্ছে।
বর্তমানে WBPMR.kolkatapolice.org–এই লিঙ্কের মাধ্যমে পরিষেবা মিললেও, আগামিদিনের কয়েক দিনের মধ্যেই রাজ্য পুলিশের পৃথক পোর্টালে এই সুবিধা পাওয়া যাবে। আজ বুধবার, বাঁকুড়া সদর থানা এলাকার মৃত এক ব্যক্তির ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রথমবার অনলাইনে আপলোড করা হয়। এই পরিষেবার সূচনা করেন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুন্ডু। সঙ্গে ছিলেন এমএসভিপি অর্পণ গোস্বামী, জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার সিদ্ধার্থ দর্জি এবং ফরেনসিক মেডিসিন অ্যান্ড টক্সিকোলজির প্রধান সোমনাথ দাস।
সোমনাথ দাস জানান, “এখন রিপোর্ট আপলোড হচ্ছে WBPMR পোর্টালে। খুব শিগগিরই রাজ্য পুলিশের নিজস্ব সাইটে পরিষেবা চালু হবে। এতে রিপোর্ট পাওয়ার প্রক্রিয়া আরও দ্রুত হবে।” প্রশাসন সূত্রের দাবি—ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তৈরি হওয়া মাত্র সুরক্ষিত সার্ভারে আপলোড করা হবে। পরিবার আবেদন করবেন রেজিস্টার্ড মোবাইল নম্বর দিয়ে। রিপোর্ট প্রস্তুত হলে যাবে ওটিপি। সেই কোড ব্যবহার করলেই বাড়িতে বসে ডাউনলোড করা যাবে রিপোর্ট। আধিকারিকদের কথায়, ময়নাতদন্ত শেষ হওয়ার সাত দিনের মধ্যেই স্বজনেরা বাড়িতে বসেই ডাউনলোড করে নিতে পারবেন ময়নাতদন্তের রিপোর্ট।
অন্যদিকে পুলিশের এক কর্তা জানান, “বারুইপুর ও বারাকপুরে এই পরিষেবায় ভালো সাড়া পাওয়া গিয়েছে। বাঁকুড়ায় চালু হওয়ায় মানুষের সময়, টাকা এবং পরিশ্রম—সবই বাঁচবে। শোকের সময় আর দৌড়ঝাঁপ করতে হবে না।” জেলা পুলিশ সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বাঁকুড়ায় প্রায় ৩,০০০টি অস্বাভাবিক মৃত্যু (Unnatural Death) নথিভুক্ত হয়। ফলে রিপোর্ট দেওয়ার চাপও বিপুল। ডিজিটাল পরিষেবা চালু হলে শুধু চাপ কমবে না, পরিবারের উদ্বেগও অনেকটাই দূর হবে বলে মত চিকিৎসক থেকে শুরু করে পুলিশ প্রশাসনের।