দলের নির্দেশের পরেও পদ আঁকড়ে! বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ৯ কাউন্সিলরের
প্রতিদিন | ২০ নভেম্বর ২০২৫
জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন ৯ জন কাউন্সিলর। পুরসভার মোট কাউন্সিলর ২২ জন। বাকিরা অবশ্য অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করতে রাজি হননি। বুধবার বিকেলে বনগাঁ পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার ও মহকুমা শাসকের দপ্তরে তাঁরা অনাস্থা প্রস্তাবের আবেদন জানান। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু জোর রাজনৈতিক টানাপোড়েন। চলছে শাসক-বিরোধী দড়ি টানাটানি।
চাহিদা অনুযায়ী নাগরিক পরিষেবা দিতে ব্যর্থতা-সহ জলযন্ত্রণা নিয়ে শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। কয়েকমাস আগে তৃণমূলের ভোটকুশলী সংস্থার সমীক্ষার রিপোর্টে এমনটাই উঠে আসে। সঙ্গে গত লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ পুরসভার ২২টি ওয়ার্ডের সবকটিতেই তৃণমূলের হারের কারণও সামনে এসেছে। এসবের জেরে বনগাঁ পুরসভায় চেয়ারম্যান বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। সেইমতো গত শুক্রবার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছিল রাজ্য নেতৃত্ব। কিন্তু দলীয় নির্দেশের মান্যতা দেননি গোপাল। পাঠাননি ইস্তফাপত্রও।
এরপরেই গোপাল শেঠকে শোকজের চিঠি পাঠায় বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল। চিঠিতে দলীয় নির্দেশ অন্যান্য করার কারণ জানতে চাওয়া হয়। শুধু তাই নয়, পদত্যাগের জন্য সাতদিনের সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু এরপরেও নিজের অবস্থানে অনড় গোপালবাবু। এখনও পুরসভার চেয়ারম্যান পদ আঁকড়ে তিনি! সাময়িক ছুটিতে যাওয়ার কথা জানান গোপাল শেঠ। তাঁর পরিবর্তে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুরজিৎ দাসকে দায়িত্বভার দিয়ে ছুটিতে যান ৷ যদিও সুরজিৎ দাসকে পৌরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার নিয়মের জটিলতার কারণে দায়িত্বভার গ্রহণ করতে দেননি।
তারপরই বুধবার বনগাঁ তৃণমূল জেলা পার্টি অফিসে বৈঠক করে অনাস্থা আবেদন জানান ৯ জন কাউন্সিলর ৷ বনগাঁ জেলা কার্যালয়ে বৈঠক চলাকালীন বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর না করে বৈঠক ছেড়ে চলে যান ৷ এ বিষয়ে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “দলীয় নির্দেশে পদত্যাগ না করায় ৯ জন কাউন্সিলর পৌরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার ও বনগাঁ মহকুমা শাসকের কাছে অনাস্থা প্রস্তাব দেন।” অনাস্থা প্রস্তাবে সই না করার প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি বলেন, “দল কেন সাসপেন্ড করছে না গোপাল শেঠকে তা জানা নেই। দল দলের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।” এ বিষয়ে বিজেপি নেতা দেবদাস মণ্ডল বলেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে চেয়ার দখলের লড়াই চলছে। এরা মানুষকে কী পরিষেবা দেবে?”