নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ক্রমশ গুরুতর হচ্ছে দিল্লি এবং সংলগ্ন এনসিআর শহরগুলির দূষণ পরিস্থিতি। বেসরকারি হিসেবে দিল্লি, এনসিআরের বাতাসে দূষণ পরিমাপক ‘এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে’র (একিউআই) মান ইতিমধ্যেই ৬০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। যদিও সরকারি তথ্য বলছে, দিল্লিতে তা ঘোরাফেরা করছে ৪০০ থেকে ৪৩০য়ের আশেপাশে। অর্থাৎ, কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের (সিপিসিবি) তথ্যে যদি কোনও গলদ না থাকে, তাহলেও দেশের রাজধানী শহরের দূষণ মান রয়েছে বিপজ্জনক সীমাতেই। এর অর্থ একটিই। তা হল, শহরের দূষণ পরিস্থিতিকে মোটেও হালকাভাবে নেওয়া যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে কি শহরজুড়ে শীঘ্রই ‘হেলথ ইমার্জেন্সি’ জারি হতে চলেছে? আপাতত এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করে তীব্র চর্চা শুরু হয়েছে। আর এহেন আবহেই বুধবার দিল্লির বিজেপি সরকারকে এক হাত নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
দেশের সর্বোচ্চ আদালত এদিন তার পর্যবেক্ষণে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, দিল্লির স্কুলগুলিতে এইসময় কোনওমতেই খেলাধুলোর আয়োজন করা যাবে না। তাহলে স্কুল পড়ুয়াদের গ্যাস চেম্বারে ঠেলে দেওয়া হবে। এই ব্যাপারে তাদের পর্যবেক্ষণে ‘কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট’কে (সিএকিউএম) প্রয়োজনীয় পরামর্শও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রণের বেঞ্চ সিএকিউএম কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে, স্কুলগুলিতে যাতে খেলাধুলোর আয়োজন না হয়, সেই ব্যাপারে জরুরি নির্দেশিকা দেওয়া হোক। জানা যাচ্ছে, বুধবার দূষণ সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আদালত বন্ধু অপরাজিতা সিং সর্বোচ্চ আদালতে জানান, নভেম্বর এবং ডিসেম্বর মাসে দিল্লি সরকার অনূর্ধ্ব-১৬ এবং অনূর্ধ্ব-১৪ স্কুল পড়ুয়াদের ইন্টার-জোনাল ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। অথচ এই সময়েই দিল্লির দূষণ পরিস্থিতি সবথেকে খারাপ অবস্থায় থাকে। অপরাজিতা সিং জানিয়েছেন, তিনি বিগত প্রায় ২০ বছর ধরে দূষণ সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলার সঙ্গে যুক্ত। দিল্লির সরকারে একাধিক দল এসেছে এবং গিয়েছে। কিন্তু দূষণ সমস্যার কোনও সমাধানই হয়নি। এরপরেই গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ শোনায় সুপ্রিম কোর্টের ওই বেঞ্চ। তুলনায় দূষণ-সুরক্ষিত মাসে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরামর্শ দিয়েছে আদালত।
এদিন আদালতে অবশ্য অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য ভাটি জানিয়েছেন, দূষণ মোকাবিলার লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই কেন্দ্র স্বল্পমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি দু’ধরনের পদক্ষেপই গ্রহণ করেছে। বিগত কয়েকদিন ধরেই দিল্লি, এনসিআরের দূষণ পরিস্থিতি মাত্রাছাড়া হয়ে রয়েছে। তবে দূষণ বাড়লেও এখনই দিল্লিতে জোড়-বিজোড় নীতি চালুর কথা ভাবছে না সরকার।