• দশমবার! বিহারে মুখ্যমন্ত্রী পদে আজ শপথ নীতীশের, মোদি সহ মন্ত্রিসভার শীর্ষ সদস্যরা পাটনায়
    বর্তমান | ২০ নভেম্বর ২০২৫
  • পাটনা: প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়াকে তুড়ি মেরে ফের বিহারে ক্ষমতায় ফিরেছে এনডিএ। বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেই আজ শপথ নিতে চলেছেন নীতীশ কুমার। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ পাটনার ঐতিহাসিক গান্ধী ময়দানে হবে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। এই নিয়ে ১০ বার মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসবেন ৭৫ বছর বয়সি জেডিইউ সুপ্রিমো, যা রেকর্ড। বুধবার পাটনা বিধানসভার সেন্ট্রাল হলে সর্বসম্মতিক্রমে এনডিএ-র পরিষদীয় নেতা নির্বাচন করা হয় নীতীশকে। এরপর তিনি বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করতে রাজভবনে যান। একইসঙ্গে রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের কাছে নতুন সরকার গঠনেরও দাবি জানান। 

    শপথ গ্রহণ উপলক্ষ্যে এখন সাজ সাজ রব গান্ধী ময়দানে। এদিন সকালেই  অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন নীতীশ। সঙ্গে ছিলেন বিদায়ী সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী এবং মুখ্যসচিব প্রত্যয় অমৃত। সূত্রের খবর, আজ নীতীশের সঙ্গেই শপথ নিতে চলেছেন ১৮-২০ জন বিধায়ক। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন সদস্যও। এছাড়াও এনডিএ শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদেরও হাজির থাকার কথা। 

    এদিন সকালে এনডিএ-র বড়ো শরিক বিজেপি এবং মেজো শরিক জেডিইউ নিজেদের দলীয় পরিষদীয় নেতা নির্বাচন প্রক্রিয়া সারে। প্রত্যাশিতভাবেই জেডিইউ এই পদে নীতীশকেই নির্বাচিত করেছে। দলের বিধায়ক অজিত কুমার বলেন, ‘নীতীশকেই আমরা পরিষদীয় নেতা নির্বাচন করেছি। এবার তাঁকে এই পদে মনোনীত করবে এনডিএ।’ বিদায়ী সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরীকে দলনেতা এবং বিজয় কুমার সিনহাকে সহকারী দলনেতা নির্বাচন করেছে বিজেপি। এর অর্থ একটাই, আগের মতোই নতুন সরকারেও উপমুখ্যমন্ত্রী থাকছেন সম্রাট এবং বিজয়। বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচিত হয়ে সম্রাট চৌধুরী বলেন, ‘বিজেপিকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আমাকে পুনরায় নির্বাচিত করার জন্য দল এবং বিধায়কদের ধন্যবাদ। বিহারের মানুষ বিজেপির উপর ভরসা রেখেছেন। দল তাঁদের প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টা করবে।’

    ১৪ নভেম্বর ফল বেরনোর পর গত চারদিন ধরে মন্ত্রী এবং গুরুত্বপূর্ণ পদ নিয়ে দর কষাকষি শুরু করেছিল এনডিএ-র শরিকরা। বিশেষ করে লোক জনশক্তি পার্টির (রামবিলাস) নেতা চিরাগ পাসোয়ান গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক দাবি করেন। এমনকি তিনি উপমুখ্যমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন বলেও খবর। তবে বিজেপির দু’জন উপমুখ্যমন্ত্রী থাকায় চিরাগের দাবি খারিজ হয়ে যায়। তবে এনডিএ-র পরিষদীয় নির্বাচনের পর পুরোনো বিবাদ ভুলে জেডিইু প্রধানের নেতৃত্বের প্রশংসাই করেছেন রামবিলাস পুত্র। বলেছেন, ‘নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে আমরা মানুষের প্রত্যাশা পূরণের কাজ করব।’ 

    এতদিন পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র দপ্তর ছিল নীতীশের হাতে। তবে এখন বড়ো শরিক হিসেবে বিজেপি এই দপ্তরে প্রতিমন্ত্রী পদ চাইছে। আগের মতোই বিধানসভার অধ্যক্ষ পদ থাকছে গেরুয়া শিবিরের হাতেই। বিজেপি বরাবরই চমকে বিশ্বাসী। এককভাবে ক্ষমতায় ফিরেই মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রী পদে নতুন মুখ এনেছে গেরুয়া শিবির। বিহারে সেই সম্ভাবনা নেই। তবে চমক যে একেবারেই থাকছে না, এমন নয়। এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘বিশাল জনাদেশ নিয়ে ফেরার অর্থ অনেক কাজ। এবার এনডিএ হয়তো জাতপাতের সমীকরণে প্রভাবিত না হয়ে অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের মিশ্রণে একটি নতুন চেহারার মন্ত্রিসভা গঠন করতে চাইবে।’
  • Link to this news (বর্তমান)