• রোগী নিরাপত্তার বালাই নেই, ফায়ার লাইসেন্স ছাড়াই চলছে বহু নার্সিংহোম
    বর্তমান | ২০ নভেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি পুরসভা এলাকায় বহু নার্সিংহোমের ফায়ার লাইসেন্স নেই। তারপরেও কী করে স্বাস্থ্যদপ্তরের লাইসেন্স পেয়ে যাচ্ছে ওই নার্সিংহোমগুলি? এই প্রশ্নে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন দমকল আধিকারিকরা। 

    সম্প্রতি শহরের হাকিমপাড়ার একটি নার্সিংহোমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর শহরের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ফায়ার লাইসেন্স তথা অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার দিকটি বিশেষভাবে খতিয়ে দেখছে দমকল বিভাগ। অগ্নিনির্বাপণ বিধি লঙ্ঘন করে নার্সিংহোম চালানোর অভিযোগে শীঘ্রই বর্ধমান রোডের একটি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে দমকল বিভাগ কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে। 

    হাকিমপাড়ার যে নার্সিংহোমে সম্প্রতি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে তার ফায়ার লাইসেন্স ছিল না। ডিভিশনাল ফায়ার অফিসার দেওয়ান লোপচা বলেন, আমাদের নির্দেশ মতো অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ চলছিল ওই নার্সিংহোমে।  ওই প্রতিষ্ঠানটি বহু পুরনো। ফলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার অনেক দিক সেখানে মানা হয়নি। তাই ফায়ার লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। আমাদের নির্দেশমতো সেখানেই সংস্কারের কাজ চলছিল। তার মধ্যেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই নার্সিংহোমের মতো শিলিগুড়িতে অনেক নার্সিংহোম তাদের লাগোয়া অন্য বিল্ডিংয়ের ফায়ার লাইসেন্স দেখিয়ে চলছে। রোগীদের নিরাপত্তার জন্য এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যদপ্তরের নজর রাখা দরকার। এরকম আরও বেশকিছু নার্সিংহোমের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে কলকাতায় দমকলের পদস্থ আধিকারিকরা রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন। কলকাতা থেকে বিশেষজ্ঞরা বেশকিছু নার্সিংহোমের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা সম্প্রতি খতিয়ে দেখে গিয়েছেন বলে জানান দেওয়ান লেপচা। 

    শিলিগুড়ি সেভক রোডের একটি বড় নার্সিংহোমকেও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা সংস্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদেরও ফায়ার লাইমেন্স নেই। সেই মতো কিছু সংস্কার হয়েছে। পুরো নির্দেশ না মানা পর্যন্ত এরকম বেশ কয়েকটি নার্সিংহোমকে ফায়ার লাইসেন্স দেওয়া হবে না বলে জানান ডিভিশনাল ফায়ার অফিসার।

    এখানেই প্রশ্ন উঠছে, ফায়ার লাইসেন্স থাকাটা বাধ্যতামূলক। সেই লাইসেন্স নেই, তা সত্ত্বেও নার্সিংহোমগুলি কী করে স্বাস্থ্যদপ্তরের লাইসেন্স নবীকরণ করাচ্ছে বা ছাড়পত্র পেয়ে যাচ্ছে? স্বাভাবিকভাবেই এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।  যদিও দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ তুলসী প্রামাণিক এতে অনিয়মের কিছু দেখছেন না। তিনি বলেন, নিয়মের মধ্যেই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ আইনিভাবে আন্ডারটেকিং দিয়ে স্বাস্থ্যদপ্তরের লাইসেন্স নবীকরণ করায়। তাদের অঙ্গীকার মতো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ঠিকঠাক করে ফায়ার লাইসেন্স নিয়ে জমা দেওয়ার লিখিত প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পরই আমরা তাদের লাইসেন্স নবীকরণ করি বা ছাড়পত্র দেই। এ ধরনের কতগুলি নার্সিংহোম অঙ্গীকার মতো তাদের ফায়ার লাইসেন্স জমা দিয়েছে সেব্যাপারে সিএমওএইচ বলতে পারেননি। তিনি বলেন, গোটা বিষয়টি দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের থেকে খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)