• মুর্শিদাবাদ: পার্টস আনিয়ে ওয়ান শটার এখন নিজেরাই বানাচ্ছে জেলার দুষ্কৃতীরা, বাড়ছে পুলিশের উদ্বেগ
    বর্তমান | ২০ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: মুঙ্গের নির্ভরতা কমছে! পার্টস আনিয়ে ওয়ানশটার এখন নিজেরাই বানাচ্ছে মুর্শিদাবাদের দুষ্কৃতীরা। নির্বাচনের আগে একনলা দেশি পিস্তল বানিয়ে নিজেদের শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা চলছে, যা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে পুলিশের। বাহুবলীদের কাছে একটি অস্ত্র থাকলেই শক্তি কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়া। সামনেই নির্বাচন। পেশি শক্তির আস্ফালন দেখাবে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা বাহুবলীরা। আগেভাগে ওয়ানশটার কিংবা সেভেন এমএম কেনার হিড়িক পড়েছে। এতদিন অধিকাংশ অস্ত্র আসত বিহারের মুঙ্গের থেকে। কিন্তু, এখন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পুলিশি ধরপাকড় বাড়তেই আগ্নেয়াস্ত্র নিজেরাই বানিয়ে ঝুঁকি কমাতে চাইছে দুষ্কৃতীরা। অস্ত্রের পার্টস এনে তারা বাড়িতেই বানিয়ে নিচ্ছে। 

    অনেকে আবার বিহারের মুঙ্গের থেকে অস্ত্র পাচারের পরিচিত রুট বদল করছে। মুঙ্গের থেকে মুর্শিদাবাদ হয়ে দক্ষিণবঙ্গের ‘চেনা রুট’ বদলে এখন বিহারের খগড়িয়া থেকে কালিয়াচক হয়ে শিয়ালদহে ঢুকছে অস্ত্র। এতদিন বাংলা ও বিহারের সীমানায় তুলনামূলক নির্জন এলাকাকে বেছে আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করত ভিনরাজ্যের দুষ্কৃতীরা। বিহার থেকে বাংলায় অস্ত্রপাচার হতো মুর্শিদাবাদ জেলা দিয়েই। আবার উত্তর দিনাজপুর হয়ে বিহার গিয়ে বেআইনি অস্ত্র কিনে বাংলায় ফিরে আসত এ রাজ্যের দুষ্কৃতীরা। তবে গত কয়েক বছরে ওই রুটে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রপাচারের একাধিক পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছে পুলিশ। জাতীয় সড়ক সহ কানেক্টিং রাজ্য সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে রাজ্য পুলিশ ও এফটিএফের তরফেও বারবার হানা দেওয়া হয়। সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে রাস্তায় রাস্তায়। ফলে দুষ্কৃতীরা ওই সব রাস্তা বাদ দিয়ে নতুন পথে খুঁজে বেআইনি অস্ত্র পৌঁছে দিচ্ছে গোটা বাংলায়। 

    কয়েক মাস আগে হাটেবাজারে এক্সপ্রেস শিয়ালদহ স্টেশনে থামতেই অভিযান চালিয়েছিল কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। হাসান শেখ নামে মালদহের এক অস্ত্র কারবারিকে গ্রেফতার করেছিল। মালদহ থেকে সে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে কলকাতায় পৌঁছয়। এমন লাগাতার অভিযানের ফলে এখন ঝুঁকি এড়িয়ে নিজেরাই ওয়ানশটার বানিয়ে নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। তার ফলে বেশ চিন্তায় আছে সীমান্তবর্তী জেলার পুলিশ। 

    গত কয়েকদিন জেলায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে প্রায় ১৭০০ বোমা উদ্ধার হয়। কিন্তু, মাত্র ২১ জন দুষ্কৃতীকে পাকড়াও করতে পারে পুলিশ। সেভাবে দুষ্কৃতীদের ধরা যায়নি। অনেকেই এখন আগ্নেয়াস্ত্র তৈরিতে মন দিয়েছে। 

    কয়েক মাস আগেই মুর্শিদাবাদের ডোমকলে একটি অস্ত্র কারখানার হদিশ পান পুলিশ আধিকারিকরা। সেখানে হানা দিয়ে অস্ত্র তৈরির একাধিক সরঞ্জাম সহ প্রচুর ওয়ানশাটার উদ্ধার হয়। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এমন ছোট ছোট ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট বানিয়ে ফেলা হয়েছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। ভিডিও দেখে লেদ মেশিনের সাহায্য নিয়ে খুব সহজেই ছোট ছোট দেশি বন্দুক বানানো হচ্ছে। যার জন্য নির্বাচনের আগে চিন্তায় পড়েছে পুলিশ।

                                   ফাইল চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)