• সই হলেও জমা পড়ল না ১৫ জন কাউন্সিলারের স্বাক্ষর নিয়ে তৈরি অনাস্থা প্রস্তাব
    এই সময় | ২০ নভেম্বর ২০২৫
  • এই সময়, কোচবিহার: কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যানের পদ থেকে রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে সরাতে ১৫ জন কাউন্সিলারের স্বাক্ষর নিয়ে তৈরি অনাস্থা প্রস্তাব। মহকুমা শাসকের কাছে তা জমা দেওয়ার অপেক্ষা। কিন্তু সই সংগ্রহের পরে ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও তা কার্যকর করার কোনও উদ্যোগ দেখা গেল না। বিষয়টি নিয়ে তাই কোচবিহার রাজনৈতিক মহলে নতুন করে জল্পনা তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূল গঠনের প্রথম দিন থেকে রয়েছেন রবি। পুরসভার চেয়ারম্যান দিদির খুবই আস্থাভাজন। তাই তাঁর তরফ থেকে সবুজ সঙ্কেত না পেলে অনাস্থা নিয়ে এগোলে নেত্রীর রোষে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ধীরে চলো নীতি নিয়ে এগোতে চাইছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। চূড়ান্ত পদক্ষেপের আগে দিদির মনোভাব বুঝে নিতে চাইছেন।

    এদিকে রবিপন্থীদের তরফ থেকে মমতা, সুব্রত বক্সি ছাড়াও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জেলার বর্তমান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রায় ৫০০ পদাধিকারীর সই করা অভিযোগপত্র পাঠানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে রাজার জেলার তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে রোজই কিছু না কিছু চমক থাকছে। মঙ্গলবার রাতে দলের জেলা কার্যালয়ে কাউন্সিলারদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন দলের জেলা সভাপতি অভিজিত দে ভৌমিক (হিপ্পি), মন্ত্রী উদয়ন গুহ, চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন। বৈঠকে কাউন্সিলারদের সই নিয়ে অনাস্থা প্রস্তাব তৈরি করে ফেলা হয়েছিল। ভাবা গিয়েছিল, বুধবারই ওই অনাস্থা নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে। কিন্তু এ দিন দিনভর সদর মহকুমা শাসকের কাছে কোনও অনাস্থাপত্র জমা পড়েনি।

    মঙ্গলবার যখন মনে করা হয়েছিল রবির পতন আসন্ন, তখন বুধবার একেবারে 'নির্বিষ' যাওয়ায় তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে অঙ্ক কষা শুরু হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, অনাস্থার মতো বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মেপে পা ফেলতে চাইছেন উদয়ন-হিপ্পিরা। যদিও গতকালের মতো এ দিনও বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি উদয়ন বা হিপ্পি। এ দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি ছাড়াও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও চিঠি পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে রবি-পার্থ গোষ্ঠীর। সোমবার প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়ের বাড়িতে বৈঠক করে এই চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

    চিঠিতে কী ভাবে দলের পুরোনো কর্মীদের কোণঠাসা করার চক্রান্ত চলছে, তার বিস্তারিত বিবরণ রাখা হবে বলে সবাই মত দেন। জানা গিয়েছে, এ সপ্তাহেই সেই চিঠি তিন জায়গায় পৌঁছে যাবে। এ বিষয়েও মুখ খোলননি রবি বা পার্থ কেউই। দুই গোষ্ঠীর এই কাজিয়া যে ভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে ক্ষুব্ধ দলের একাংশ। তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ বলছেন, 'কোচবিহারে যে সমস্যা চলছে, তার দ্রুত সমাধান হওয়া উচিত। তাতে দলের পক্ষেই ভালো।'

  • Link to this news (এই সময়)