• বিকল্প শিক্ষা নীতির ডাক শিক্ষাবিদদের সম্মেলনে
    আনন্দবাজার | ২০ নভেম্বর ২০২৫
  • জাতীয় শিক্ষা নীতির রূপায়ণ ঘিরে এ দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় সত্তার নানা বিপন্নতার দিক মেলে ধরলেন রাজ্যের শিক্ষাবিদেরা। বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অল ইন্ডিয়া সেভ এডুকেশন কমিটি’র ডাকে জড়ো হয়েছিলেন তাঁরা। একই সঙ্গে, উচ্চ শিক্ষার নানা বাধার দিকও উঠে আসে এ দিনের আলোচনায়। স্নাতক স্তরে চার বছরের শিক্ষাক্রমে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এ রাজ্যে চতুর্থ বর্ষের পঠনপাঠন শুরু হবে। এই অবস্থায় জাতীয় শিক্ষা নীতির নানা ধারা কার্যকর করার সমস্যাগুলি নিয়েও পোড়খাওয়া অধ্যাপক, শিক্ষকেরা সরব হন।

    আগামী বছরের ২৪ জানুয়ারি জাতীয় শিক্ষা নীতির নানা ক্ষতিকর দিক নিয়ে জনসংসদে শামিল হবে অল ইন্ডিয়া সেভ এডুকেশন কমিটি। এর আগে দেশের প্রথম সারির শিক্ষাবিদদের পরামর্শে জন শিক্ষা নীতি বলে খসড়া আকারে জাতীয় শিক্ষা নীতির একটি বিকল্প প্রস্তাব তারা প্রকাশ করেছে। তারই সূত্র ধরে এ দিন শিক্ষাজগতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নানা জন সরব হয়েছেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহ-উপাচার্য সিদ্ধার্থ দত্ত, দেশের ন্যাশনাল সায়েন্স অ্যাকাডেমির বিজ্ঞানী ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায় বা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা আইসার কলকাতা-র প্রাক্তন অধিকর্তা অমিতাভ দত্ত জাতীয় শিক্ষা নীতিতে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি শিক্ষা ও গবেষণার সঙ্কটের কথা বলেন। সিদ্ধার্থের মতে, ‘‘জাতীয় শিক্ষা নীতিতে ইঞ্জিনিয়ারিং, ডাক্তারি শিক্ষা পুরো বেসরকারিকরণের পথে।’’

    কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য প্রাক্তন অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে-ও গবেষণা পরিকাঠামোর দুরবস্থা নিয়ে বলেছেন। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের স্বাধিকার, স্বকীয়তা রক্ষায় সরকারি অনীহাও শিক্ষার বিকাশে বড় বাধা বলে তাঁর মত। প্রাক্তন সাংসদ তথা অবসরপ্রাপ্ত সংস্কৃতি সচিব, সুলেখক জহর সরকার জাতীয় শিক্ষা নীতির অন্তর্গত ত্রিভাষিক শিক্ষা নীতির বিপদ নিয়ে ওয়াকিবহাল করেন। তাঁর মতে, ‘‘তিনটি ভাষা শিক্ষাক্রমে রেখে আসলে সর্বত্র হিন্দিরই দরজা খোলা হচ্ছে। জনসংখ্যার ভিত্তিতে লোকসভার আসন বিন্যাস পাল্টে হিন্দিভাষী রাজ্যে আসন বাড়ানো এবং শিক্ষা নীতির মাধ্যমে হিন্দি প্রচার কেন্দ্রের এখনকার সরকারের রাজনীতির অঙ্গ।’’

    উদ্যোক্তাদের তরফে সর্বভারতীয় শিক্ষা বাঁচাও কমিটির সাধারণ সম্পাদক তরুণকান্তি নস্করও ‘জন শিক্ষা নীতি’-র খসড়ার সুপারিশগুলি মেলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘‘সংবিধান পাল্টে শিক্ষাকে রাজ্যের হাতে রাখতে হবে। মাতৃভাষা ও ইংরেজি কেন্দ্রিক শিক্ষা নীতি চালাতে হবে। কেন্দ্রীয় বাজেটের ন্যূনতম ১০ শতাংশ এবং জিডিপির ৬ শতাংশ, সেই সঙ্গে রাজ্য বাজেটের ২০-২৫ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ নিশ্চিত করতেও হবে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)