• যোগীরাজ্য ডিজিটাল জালিয়াতির আঁতুড়ঘর? পরপর গ্রেপ্তারিতে উঠছে প্রশ্ন
    প্রতিদিন | ২০ নভেম্বর ২০২৫
  • অর্ণব আইচ: মোদিরাজ‌্য ও যোগীরাজ‌্যই কি ডিজিটাল জালিয়াতির আঁতুড়ঘর? শহরে দু’টি ডিজিটাল গ্রেপ্তারির ঘটনায় আড়াই কোটি টাকা যে জালিয়াতরা হাতিয়ে নিয়েছে, তারা হয় গুজরাট, না হয় উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা, এমনই প্রমাণ মেলার পর উঠে এসেছে এই প্রশ্ন। দক্ষিণ কলকাতার নেতাজিনগর এলাকার ৮৪ বছরের এক বৃদ্ধকে ডিজিটাল গ্রেপ্তারির ভয় দেখিয়ে তাঁকে ঘরবন্দি করে রাখে জালিয়াতরা। তাঁকে ভয় দেখিয়ে ১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। নেতাজিনগর থানার পুলিশ তদন্ত করে গুজরাট ও উত্তরপ্রদেশ থেকে প্রায় ৬৫ লাখ টাকা উদ্ধার করে।

    আবার একই সঙ্গে পূর্ব কলকাতার কাঁকুড়গাছির বাসিন্দা এক বৃদ্ধাকে পুলিশ ও সিবিআই সেজে ডিজিটাল গ্রেপ্তারির ভয় দেখিয়ে তাঁর ব‌্যাঙ্ক অ‌্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৭৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় জালিয়াতরা। এই ব‌্যাপারে লালবাজারের সাইবার থানার আধিকারিকরা তদন্ত করে গুজরাট থেকে তিন জালিয়াতকে গ্রেপ্তার করেন। তাদের মধ্যে একজন পেশায় শিক্ষক বলেই জানা গিয়েছে। ধৃতদের নাম ভারু রবিকান্ত গোকালভাই, সোন্দার্ভা জিলেশ নরেন্দ্রভাই ও চান্দেরা বিপুলকুমার কানাভাই। গুজরাটের রাজকোট-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদের গোয়েন্দারা গ্রেপ্তার করেন।

    পুলিশ জানিয়েছে, প্রথম ঘটনাটিতে নেতাজিনগরের ওই বৃদ্ধকে ফোন করে বলা হয়, তাঁর নামে বেআইনি বস্তুর পার্সেল এসেছে। নিজেদের পুলিশ ও সিবিআই পরিচয় দিয়ে জালিয়াতরা বলে, তাঁকে ডিজিটাল গ্রেপ্তারি করা হয়েছে। তিনি যেন বাড়ির বাইরে না বের হন। তাদের জরিমানা দিলেই তিনি একমাত্র ছাড়া পেতে পারেন। ওই বৃদ্ধ ভয় পেয়ে নিজেকে গৃহবন্দি করে রেখে তাদের কথামতোই বিভিন্ন অ‌্যাকাউন্টে ১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা পাঠান। ওই টাকা গুজরাট ও উত্তরপ্রদেশের ব‌্যাঙ্ক অ‌্যাকাউন্টে যায়। শেষ পর্যন্ত পরিচিতরা তাঁকে জানান, তাঁকে কোনও গ্রেপ্তারি করা হয়নি। পুলিশ তদন্ত শুরু করার পর দশদিনের মধ্যেই গুজরাটের ভাদোদারার অক্ষরচকের একটি বেসরকারি ব‌্যাঙ্ক থেকে ৬৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬০০ টাকা ও উত্তর প্রদেশের বালিয়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব‌্যাঙ্ক থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৭২ টাকা উদ্ধার করে।

    দ্বিতীয় ঘটনাটিতে কাঁকুড়গাছির বৃদ্ধাকে ফোন করে বলা হয়, তাঁর নামে মুম্বই থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা ঝাং নামে এক ব‌্যক্তিকে পাঠানো হচ্ছে। ওই পার্সেল থেকে উদ্ধার হয়েছে ২০০ গ্রাম বিদেশি মাদক এমডিএমএ। তাঁকে মুম্বই পুলিশ ও সিবিআইয়ের নাম করে জাল বৈদ্যুতিন নথি পাঠানো হয়। ডিজিটাল গ্রেপ্তারির ভয়ে তিনি নিজের দু’টি অ‌্যাকাউন্ট থেকে দু’দফায় ৭৯ লাখ টাকা পাঠান। দু’টি ঘটনার পর পুলিশ অনেকটাই নিশ্চিত যে গুজরাট ও উত্তরপ্রদেশ থেকেই ডিজিটাল জালিয়াতি চালাচ্ছে জালিয়াতরা। তাদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)