চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে সারা দেশের সঙ্গে সুন্দরবনেও বাঘ গণনার কাজ শুরু করতে চলেছে বন দফতর। টানা ৪৫ দিন জঙ্গলে স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা বসিয়ে বাঘের ছবি তোলার কাজ চলবে। সেই ছবি বিচার বিশ্লেষণ করে সুন্দরবনে বর্তমানে বাঘেদের সঠিক সংখ্যা কত তা জানতে পারবে বন দফতর। বাঘ গণনার পাশাপাশি, এ বার ফের কুমির গণনার কাজও শুরু করতে চলেছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প। সব কিছু ঠিক থাকলে ১১ ডিসেম্বর থেকে সুন্দরবনে কুমির গণনার কাজ শুরু হবে।
দীর্ঘ বারো বছর পরে ২০২৪ সালে সুন্দরবনে কুমির গণনার কাজ করেছিল বন দফতর। মূল উদ্দেশ্য ছিল, ভারতীয় সুন্দরবনে কত কুমির রয়েছে, সেই সংখ্যা নির্ধারণ। সেই সুমারিতে ভারতীয় সুন্দরবন এলাকায় ২০৪টি কুমির ছিল বলে অনুমান করে বন দফতর। তবে সংখ্যাটা ২৩৪ পর্যন্ত হতে পারে বলেও তারা জানিয়েছিল।
গত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ফের কুমির গণনা হয়। সুন্দরবন সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প জানিয়েছে, শেষ কুমির সুমারিতে সুন্দরবনে কুমিরের সংখ্যা ৪০৩টি। এর মধ্যে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকায় মিলেছে ২০৬টি ও ২৪ পরগনা বনবিভাগ এলাকায় ১৯৭টি। ২১৩টি কুমিরকে সরাসরি চোখে দেখা গিয়েছিল। বাকি ১৯০টির অস্তিত্ব লক্ষ্য করা গিয়েছিল বলে দাবি করে বন দফতর।
ভারতীয় সুন্দরবন এলাকায় বর্তমানে ঠিক কত কুমির আছে, তা জানতে ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি— পর পর তিন মাসে অভিযান চালানো হবে। প্রতি মাসে তিন-চারটি দিন এক সঙ্গে বনকর্মীরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে কাজ করবেন। ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণ-পর্ব মিটেছে বলে দফতরের সূত্রের খবর। বনকর্মীরা সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকা এবং ২৪ পরগনা বনবিভাগ এলাকায় কুমিরের খোঁজে বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করবেন। মূলত, খালি চোখে দেখেই কুমির গণনা করা হয়। কোথাও কুমিরের উপস্থিতি বিশেষজ্ঞেরা অনুভব করলে সেই সংখ্যাও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এ ছাড়াও, যে এলাকায় কুমিরের দেখা মিলছে, সেই এলাকার অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ, জলের তাপমাত্রা, লবণতার পরিমাণ-সহ নানা তথ্য রেকর্ড করা হবে। উদ্দেশ্য, কোন পরিবেশে কুমিরেরা থাকতে বেশি পছন্দ করছে, তা সেটা জানা।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন, ‘‘সুন্দরবনের প্রায় ৪২০০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই গণনার কাজ চলবে। সরাসরি খালি চোখে দেখে এবং এলাকায় কুমিরের উপস্থিতি অনুভব করে সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে। আশা করা যায়, গত বারের মতোই ভাল ফল মিলবে।’’