পুজোর আগে টানা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আনাজ চাষ। নষ্ট হয়েছে বেগুন, শশা, উচ্ছে, লঙ্কা-সহ শীতকালীন আনাজ। ফলে শীতের মরসুমের শুরুতে উৎপাদন অনেক কম। এ দিকে, বাজারে জোগান কম হওয়ায় গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে আনাজের দাম বেড়েছে বলে জানালেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
চাষি ও ব্যবসায়ীরা অনেকে জানালেন, সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত টানা বৃষ্টি হয়েছে। জলে ডুবেছিল বিঘার পর বিঘা ফসলের মাঠ। শীতকালীন আনাজের চাষ করা হয় ওই সময়ে। বারাসত মহকুমার দত্তপুকুর, আমডাঙা, দেগঙ্গা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষের জমিতে অধিকাংশ চাষি সময় মতো শীতকালীন আনাজের চারা বপন করতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে যাঁরা উঁচু জমিতে আনাজের চারা বপন করেছিলেন সেপ্টেম্বরে, সেই জমির ফসল বর্তমানে স্থানীয় বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।
বুধবার বারাসত, দেগঙ্গা, আমডাঙা, দত্তপুকুর ছাড়াও মহকুমার বাজারগুলিতে বেগুন, উচ্ছে, শিম, কাঁচা টমেটো ১০০ টাকা, মুলো ৬০ টাকা, ধনে পাতা ২০০ টাকা, পালং শাক ১00 টাকা, লঙ্কা ১৫০ টাকা, ওলকপি, পটল ও ভেন্ডি ১০০ টাকা কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছে। ফুলকপি প্রতি পিস আকার অনুযায়ী ২০-৫0 টাকায় বিক্রি হয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, গত বছর এই সময়ের তুলনায় চলতি সময়ে আনাজের দাম প্রায় দ্বিগুণ।
দত্তপুকুরের চাষি আইজুল গাজি, সফিকুল মণ্ডল বলেন, ‘‘শীতকালীন ফসল বোনার সময়ে বৃষ্টিতে চারা মরে যাওয়ায় ফের বপণ করতে হয়েছে। যাঁরা উঁচু জমিতে চাষ করেছেন, তাঁদের ফসল বাজারে যাচ্ছে। সেই ফলন কম হওয়ায় বাজারে জোগান কম।’’ দেগঙ্গার চাষি ফজলে করিম, রহমত আলিরা বলেন, ‘‘ফলন দেরিতে হবে এ বার। যাঁদের ফলন আগে হয়েছে, তাঁদের ফসল বাজারে যাচ্ছে। চাষিরা বেশি দামে বিক্রি করায় বাজারে দাম বেড়েছে।’’
বারাসত বাজারের ব্যবসায়ী সঞ্জয় বিশ্বাস, দত্তপুকুর বাজারের ব্যবসায়ী নিশীথ মণ্ডলেরা জানালেন, গত বছরের তুলনায় চাষিদের থেকে দ্বিগুণ দামে আনাজ কিনতে হচ্ছে। ক্রেতারা দাম শুনে বাজার ঘুরে কম পরিমাণে কিনছেন। অরবিন্দ ঘোষ, নীলিমা দাসেদের মতো ক্রেতারা জানালেন, শীতের মরসুমে নানা ধরনের আনাজ খেতে ভাল লাগে। তবে এ বার বাজারে চড়া দাম। ফলে পরিমাণে কম কিনছেন। কিছু আনাজ তো চড়া দামের জন্য হাতই দিচ্ছে না।