সংশোধিত ওয়াকফ বিল নিয়ে গোলমাল দেখেছে জঙ্গিপুরের শমসেরগঞ্জ। এনআরসি তাণ্ডব দেখেছে সুতিও। তাই আশঙ্কা ছিল এসআইআর নিয়ে বিড়ি মহল্লায় কী হয়। কিন্তু বাস্তবে ছোট খাট রাজনৈতিক তর্ক বিতর্ক ছাড়া কিছুই ঘটেনি এ পর্যন্ত। তবে সর্বত্রই যেন “ভোট ভোট” হাওয়া।কেউ কেউ খাতা নিয়ে হিসেব কষতেও শুরু করে দিয়েছেন কার কার নাম বাতিল হবে। কে মৃত, কে বা বিয়ে হয়ে চলে গেছে অন্যত্র। সিপিএমের সুতির এক নেতার খাতায় লেখা ৪২ জনের নাম, যাঁরা বাদ পড়বেন তালিকা থেকে। বলছেন, “খসড়া তালিকায় এদের কারও নাম উঠলেই আপত্তি জানাতে হবে। তাই এই প্রস্তুতি।”
তবে নির্বাচনের আগে “স্পেশাল ইন্টেন্সিভ রিভিসন” সংক্ষেপে এসআইআর গ্রামে গ্রামে এখন থেকেই ভোটের প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক নেতাদের ব্যস্ততা চরমে। তাই রাজনৈতিক দলগুলি এসআইআরকে জনসংযোগের মাধ্যম করে তোলার চেষ্টার কসুর করছেন না।
এসআইআর নিয়ে বিরোধিতা থাকলেও জনসংযোগে অনেকটাই এগিয়ে শাসক দল তৃণমূল।জেলার প্রতিটি বুথেই ছাউনি করে দলের কর্মীরা বসে আছেন সেখানে “ভোট রক্ষার” মঞ্চে।তুলনায় দুর্বল হলেও বিরোধী সিপিএম ও কংগ্রেস সংগঠিত ভাবে না হলেও মাঠে রয়েছেন তাঁরাও। কিছুটা পিছিয়ে হলেও বিজেপির কর্মীরা আছেন বিশেষ কয়েকটি পকেটে তাঁদের সাধ্য মতো। আবার বহু জায়গাতেই এলাকার উৎসাহী শিক্ষিত ছেলেরাই বাড়ির বারান্দায় বসে পড়েছেন এসআইআর ফর্ম পূরণে। কোথাও আবার মিম, এসডিপিআই কর্মীরাও আছেন ময়দানে।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি খলিলুর রহমান ইতিমধ্যেই জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার প্রায় সব এলাকায় চষে ফেলেছেন। বক্তব্য রাখছেন। এক এক দিনে ১০-১২টি শিবিরে গিয়ে কাজের খতিয়ান নিচ্ছেন কর্মীদের কাছ থেকে। বসে নেই বিধায়কেরাও। কারণ আগামী ভোটের তাগিদ বেশি তাদেরই। কারণ সকলেরই উদ্বেগ ভোটার বাতিলের সংখ্যা নিয়ে।
খলিলুর বলছেন, “এখনই ভোট বাতিলের চিত্র স্পষ্ট হবে না। কর্মীরা মাঠে রয়েছেন, ফর্ম পূরণে সাহায্য করছেন, যাতে ফর্মে ভুল না থাকে। শিক্ষিত কর্মীরাই সে কাজ করছেন কারণ এসআইআর নিয়ে নানা বিভ্রান্তি কাটাতে হচ্ছে। এখন অনেকটাই কেটেছে। সর্বত্রই কর্মীরা পরিশ্রম করছেন। প্রতিটি শিবিরেই ভাল ভিড় হচ্ছে। যত ভিড় বাড়বে ততই দলের জনসংযোগ বাড়বে।তুলনায় বিরোধীরা কোথায়? কোথাও কোথাও বাড়ির বারান্দায়, নিজের বাড়িতে কোনও কোনও বিরোধী নেতা দু’চার জনের ফর্ম পূরণ করে দিচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু তাকে ঠিক জনসংযোগ বলে না।তৃণমূল রয়েছে ১০০শতাংশ বুথেই।”
শমসেরগঞ্জের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক তোয়াব আলি বলছেন, “তৃণমূল শাসক দল। পয়সার অভাব নেই। তাই বাজনা বেশি। বিরোধীরা আছে কি নেই শমসেরগঞ্জ ও ফরাক্কার লোকসভা ভোট বলে দিয়েছে। আমাদের সংগঠন দুর্বল হলেও মাঠে আছে। ৮০ শতাংশ বুথে দলের এজেন্ট রয়েছে। তাঁরাই কাজ করছেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে। আসল জনসংযোগতো সেটাই।”