সিলিন্ডারের বদলে হাসপাতালে পাইপলাইনে পৌঁছবে অক্সিজেন
আনন্দবাজার | ২০ নভেম্বর ২০২৫
রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল, নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতাল ও হুগলির আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজে বসতে চলেছে আধুনিক মেডিক্যাল গ্যাস পাইপলাইন ব্যবস্থা (এমজিপিএস)। প্রকল্পের খরচ এক কোটি ৩২ লক্ষ টাকারও বেশি। স্বাস্থ্য দফতর ইতিমধ্যেই প্রকল্পের অর্থ অনুমোদন করে কাজের দায়িত্ব দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল সার্ভিসেস কর্পোরেশনের হাতে।
মেডিক্যাল গ্যাস পাইপলাইন ব্যবস্থা চালু হলে আর আলাদা আলাদা অক্সিজেন সিলিন্ডারের উপরে ভরসা করতে হবে না। কেন্দ্রীয় উৎস থেকে সরাসরি আইসিইউ, অপারেশন থিয়েটার, বিভিন্ন ওয়ার্ড ও জরুরি বিভাগে অক্সিজেন, মেডিক্যাল এয়ার ও নাইট্রাস অক্সাইড পৌঁছে যাবে। ফলে জরুরি মুহূর্তে সময় বাঁচবে, দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমার সঙ্গে পরিষেবা মিলবে আরও দ্রুত।
জানা গিয়েছে, নবদ্বীপ হাসপাতালে ম্যানিফোল্ড ঘর তৈরি, বৈদ্যুতিন কাজ, মেডিক্যাল গ্যাস পাইপলাইন সিস্টেম বসানো ও তিন বছরের রক্ষণাবেক্ষণে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৭৭ লক্ষ টাকা। আরামবাগে খরচ প্রায় ২৯ লক্ষ ও রানাঘাটে প্রায় ২৬ লক্ষ টাকা। প্রকল্পের অর্থ এসেছে ‘ইমার্জেন্সি কোভিড রেসপন্স প্যাকেজ–দ্বিতীয় পর্যায়’ থেকে। কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে রাজ্যের হাসপাতালগুলির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নত করতে কেন্দ্রীয় সরকারের এই বরাদ্দ ব্যবহার করা হয়।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কোভিড পরবর্তী সময়ে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল ও নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পৃথক করোনা ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। রানাঘাটে সেই ভবনের কাজ ইতিমধ্যেই শেষ। সেখানে পুরুষ, মহিলা মেডিসিন বিভাগ এবং শল্য বিভাগ চালু হয়েছে। প্রতিটি শয্যায় রয়েছে অক্সিজেন লাইনের ব্যবস্থা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, মেডিক্যাল গ্যাস পাইপলাইন সিস্টেম পুরোপুরি চালু হলে ওই ভবনের রোগীরাও পাইপলাইনের সাহায্যে প্রয়োজন মতো সরাসরি অক্সিজেন পাবেন, ফলে সিলিন্ডারের ঝক্কি একেবারে কমে যাবে। এমনিতেই কোভিড পরবর্তী সময়ে সরকারি হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে। তাই নিরবিচ্ছিন্ন ও নিরাপদ অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা তৈরির প্রয়োজনীয়তাই এখন সবচেয়ে বড়। চিকিৎসকদের অনেকেই মানছেন, চিকিৎসা পরিষেবার মান বাড়াতে এমন উদ্যোগ জরুরি। আধুনিক হাসপাতালের জন্য মেডিক্যাল গ্যাস পাইপলাইন ব্যবস্থা অপরিহার্য।
রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের সুপার প্রহ্লাদ অধিকারী বলেন, ‘‘মেডিক্যাল গ্যাস পাইপলাইন ব্যবস্থা চালু হলে অক্সিজেন সরবরাহ সম্পূর্ণ নিরবিচ্ছিন্ন হবে। সিলিন্ডার বদলের ঝামেলা থাকবে না। জরুরি পরিষেবা আরও দ্রুত, নিরাপদ হবে।’’ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের প্রবীণ নেতা মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ সরাসরি উপকৃত হবেন।’’