• সাড়ে ছ’ঘণ্টার যানজট মুম্বই রোডে, দুর্ভোগ
    আনন্দবাজার | ২০ নভেম্বর ২০২৫
  • কেউ যাচ্ছিলেন অফিসে, কেউ হাসপাতালে, কেউ স্কুলে বা অন্য কাজে। বুধবার সকালে মুম্বই রোডের কলকাতামুখী লেনে তীব্র যানজটের কারণে ভুগতে হল বহু মানুষকে। ভোর থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত গাড়ি প্রায় নড়েইনি। উলুবেড়িয়া থেকে শুরু করে সাঁতরাগাছি ছাড়িয়েও গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। আটকে পড়ে অ্যাম্বুল্যান্স। অবস্থা সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। ওই সড়কে গাড়ি কার্যত জট পাকিয়ে যাওয়ায় অন্য রাস্তাতেও যানবাহনের চাপ পড়ে। ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকারা পৌঁছতে না পারায় একাধিক বেসরকারি স্কুলে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার খিদিরপুরে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত হাওড়ায় মুম্বই রোডের ওই লেনে পণ্যবাহী গাড়ির ‘নো এন্ট্রি’ ছিল। ফলে, গ্রামীণ হাওড়ার বাগনান, উলুবেড়িয়া, পাঁচলা-সহ বিভিন্ন জায়গায় সার দিয়ে ট্রাক দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। বুধবার সকালে ‘নো এন্ট্রি’ উঠতেই অসংখ্য গাড়ি কলকাতা অভিমুখে চলতে শুরু করে। তাতেই সব জট পাকিয়ে যায়। লোকাল ও দূরপাল্লার বাস, গাড়ির যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হন।

    হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপার সুবিমল পাল জানান, খিদিরপুরে ওই অনুষ্ঠানের জন্য কলকাতা পুলিশের তরফে এই সড়কে পণ্যবাহী গাড়ি ‘নো এন্ট্রি’ করার কথা বলা হয়। সেই মতোই গাড়ি আটকানো হয়। বেশি রাতে দ্বিতীয় হুগলি সেতু পুরোপুরি বন্ধ করা হয়। তখন শুধুমাত্র নিবেদিতা সেতু দিয়ে গাড়ি কলকাতায় যাচ্ছিল। সকালে রাস্তায় গাড়ির চাপ বেশি থাকায় কিছুটা যানজট হয়। বেলায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়।

    যানজটের সময়ে দেখা যায়, বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে যাত্রীদেরভিড়। অনেকেই বাস থেকে নেমে রেলপথে গন্তব্যে পৌঁছনোর চেষ্টা করেন। ফলে, ট্রেনেও অতিরিক্ত ভিড় হয়। বাগনান বা উলুবেড়িয়া থেকে কিছু গাড়ি ও বাস রাজ্য সড়ক ধরে ঘুরপথে কলকাতায় যাওয়ার চেষ্টা করে। বহু মানুষ নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে পৌঁছতে পারেননি। মেদিনীপুর থেকে কলকাতাগামী বেশ কিছু অ্যাম্বুল্যান্স মুম্বই রোডে আটকে যায়। পুলিশকর্মীরা অন্য রাস্তা দিয়ে সেগুলিকে পাঠানোর চেষ্টা করেন।

    সকাল ৯টা নাগাদ উলুবে়ড়িয়া মনসাতলার কাছে যানজটে আটকে থাকা দূরপাল্লার একটি বেসরকারি বাসের যাত্রী, দমদমের বাসিন্দা মিঠু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাঁচী থেকে ফিরছি। ভোর সাড়ে ৫টায় বাবুঘাটে পৌঁছানোর কথা ছিল।’’

    যানজটের কারণে সাঁকরাইল, খলিসানি ইত্যাদি জায়গার একাধিক বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পুলকার বা বাস ছাত্রছাত্রীদের আনতে যেতে পারেনি। ফলে, স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। মনোতোষ দাস নামে এক বাসচালকের বক্তব্য, ‘‘পুলিশ জানে, মুম্বই রোড কত গাড়ির চাপ নিতে পারে। একসঙ্গে সব ট্রাক ছেড়ে দেওয়াতেই এই অবস্থা।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)