• চাপের মুখে চা পাতা তোলার মরশুম শেষের দিন বাড়াতে চলেছে টি বোর্ড
    বর্তমান | ২০ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: বাগান মালিকদের চাপের মুখে এবার কাঁচা চা পাতা তোলার মরশুম শেষের দিন বাড়াতে চলেছে টি বোর্ড। গত বছর বাগানে প্রচুর কাঁচা চা পাতা থাকা সত্ত্বেও ৩০ নভেম্বর মরশুম শেষের দিন ঘোষণা করা হয়েছিল টি বোর্ডের তরফে। ফলে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে হয় উত্তরবঙ্গের চা শিল্পকে। টি বোর্ডের হঠকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হন পাহাড়, তরাই-ডুয়ার্সের চা বাগান মালিকরা। চা শিল্প মহলের সঙ্গে কথা না বলে একতরফাভাবে কাঁচা পাতা তোলার শেষদিন ধার্য করা নিয়ে কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণাধীন টি বোর্ডের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনিয়ে রাজ্যের পক্ষ থেকে কেন্দ্রকে চিঠিও লেখা হয়। এবার অবশ্য আগেভাগে উত্তরের চা বাগান মালিকরা টি বোর্ডকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কোনওভাবেই ৩০ নভেম্বর কাঁচা পাতা তোলার শেষদিন ধার্য করা যাবে না। অন্তত ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত চায়ের পাতা তোলার মরশুম চালু রাখতে হবে। তার আগে পাতা তোলা বন্ধের বিজ্ঞপ্তি জারি হলে টি বোর্ডের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলন হবে। এই পরিস্থিতিতে চাপের মুখে পড়ে সম্ভবত এবার উত্তরবঙ্গে কাঁচা চা পাতা তোলার মরশুম বাড়ানোর পথে হাঁটতে চলেছে টি বোর্ড। তবে এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত তাদের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

    এনিয়ে টি বোর্ডের জলপাইগুড়ির অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর নিপুন বর্মন বলেন, গত বছর ৩০ নভেম্বর বাগানে কাঁচা চা পাতা তোলার শেষ দিন ধার্য করা হয়েছিল। এবার বাগান মালিকদের সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের মতামত নেওয়া হয়েছে। টি রিসার্চ সেন্টারের কাছ থেকেও তথ্য নিয়েছি। তবে এখনও পর্যন্ত মরশুম শেষের দিন ঘোষণা করা হয়নি।

    ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা অমৃতাংশু চক্রবর্তী বলেন, অসম আর উত্তরবঙ্গের আবহাওয়া এক নয়। ফলে অসমের কথা ভেবে যদি টি বোর্ড উত্তরবঙ্গে চা পাতা তোলার মরশুম শেষের দিন ঘোষণা করে, তা কখনও ঠিক হবে না। গত বছর বাগানে প্রচুর ভালো পাতা ছিল। কিন্তু ৩০ নভেম্বর পাতা তোলার মরশুম শেষের দিন ধার্য করে দেয় টি বোর্ড। তাদের এই অবিবেচক সিদ্ধান্তের জেরে উত্তরবঙ্গের চা শিল্প মহল মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ে। তাঁর দাবি, এবার ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের আগে কোনওভাবে চা বাগানে কাঁচা পাতা তোলা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া যাবে না। টি বোর্ডের সঙ্গে বৈঠকে এটা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

    জলপাইগুড়ি ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ২০২৪ সালে উত্তরবঙ্গে ডিসেম্বর মাসে ৪ কোটি ৯০ লক্ষ কেজি চা উৎপাদন হয়েছিল। গত বছর ৩০ নভেম্বর টি বোর্ড কাঁচা পাতা তোলা বন্ধ করে দেওয়ায় যা সম্ভব হয়নি। এবারও যা পরিস্থিতি, বেশিরভাগ বাগানে ডিসেম্বরের প্রথম দু’সপ্তাহ খুব ভালোমানের পাতা থাকবে। ফলে টি বোর্ড যেন সেই বুঝে নির্দেশিকা জারি করে, এ ব্যাপারে তাদের বলা হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)