রাজস্ব সংক্রান্ত মন্ত্রিগোষ্ঠীর কমিটিতে বাংলাকেও ঠাঁই দিতে বাধ্য হল কেন্দ্র, জিএসটি বাবদ ক্ষতি আদায়ে সরব হবেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা
বর্তমান | ২০ নভেম্বর ২০২৫
বাপ্পাদিত্য রায়চৌধুরী, কলকাতা: উৎসবের মুখে বিভিন্ন পণ্য ও পরিষেবার হার কমিয়েছে জিএসটি কাউন্সিল। বদল করা হয়েছে জিএসটির কাঠামোতেও, যার সুবিধা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তবে এই কাজে রাজ্যগুলির রাজস্ব আদায় যে কমবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের জেরে রাজ্যের বার্ষিক রাজস্ব আদায় কমবে ২০ হাজার কোটি টাকা। সেই ক্ষতি কীভাবে পূরণ হবে? কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলির ভাঁড়ার ভরতে কী কী পদক্ষেপ করবে? এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে রা কাড়েনি মোদির অর্থমন্ত্রক। কিন্তু সেই দাবিদাওয়া নিয়ে সরব হতে আরও একধাপ এগোল বাংলা। জিএসটি বাবদ যে রাজস্ব আদায় হয়, তার বিশ্লেষণ করে কোনও নীতিগত সিদ্ধান্তে আসার জন্য আগেই গঠিত হয়েছিল আলাদা মন্ত্রিগোষ্ঠীর কমিটি। সেই কমিটিতে ঠাঁই হল বাংলার। এর ফলে ওই কমিটিতে রাজ্যের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি কমিটিতে সরব হবেন রাজ্যর রাজস্ব ক্ষতি সংক্রান্ত দাবিদাওয়া নিয়ে। জিএসটি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয় কাউন্সিলের বৈঠকে। তবে সেই সিদ্ধান্তগুলি চূড়ান্ত করার আগে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বা অর্থমন্ত্রীরা নিজেদের মধ্যে যাতে আলাপ-আলোচনা করতে পারেন, তার জন্য গঠন করা হয়েছে একাধিক মন্ত্রিগোষ্ঠী। সেই কমিটিগুলি যা সুপারিশ করে, তা সাধারণত মেনে নেওয়া হয় জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে। এমনই একটি মন্ত্রিগোষ্ঠীর কমিটি তৈরি হয়েছে, যা জিএসটি সংক্রান্ত রাজস্বের বিশ্লেষণ করে থাকে। রাজ্যগুলিতে জিএসটির আদায়ের প্রবণতা কী, কোন কোন পদক্ষেপ করলে রাজস্ব বাড়ানো যায়, কোনও রাজ্যের রাজস্ব সংক্রান্ত ঘাটতি থাকলে, তা মেটানোর জন্য কী কী করণীয়, এই বিষয়গুলি নিয়ে মূলত বিশ্লেষণ করে ওই মন্ত্রিগোষ্ঠী। তারা যে সুপারিশ করে, তা জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিতে কাজে লাগে। সেই বৈঠকে বাংলাকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি ছিল। সেই দাবি অবশেষে মেনে নেওয়া হল। রাজ্যগুলির রাজস্ব ক্ষতির বিষয়ে কী পদক্ষেপ করা হবে, সেই প্রসঙ্গ জিএসটি কাউন্সিলের শেষ বৈঠকে তুলেছিলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
কিন্তু তার কোনও সদুত্তর মেলেনি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান তথা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কাছ থেকে। তারপরও কোনও উচ্চবাচ্য শোনা যায়নি কেন্দ্রের তরফেও। এই পরিস্থিতিতে মন্ত্রিগোষ্ঠীর কমিটিতে বাংলাকে অন্তর্ভুক্ত করায়, তা সেই দাবিদাওয়া আদায়ে সুযোগ তৈরি করে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, চলতি মাসে তাঁকে জানানো হয়েছে, জিএসটির রাজস্ব বিশ্লেষণ সংক্রান্ত মন্ত্রিগোষ্ঠীতে তাঁকে রাখা হয়েছে। এই দাবি অনেকদিন ধরেই ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। অবশেষে দাবি মানতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্র। চন্দ্রিমাদেবী বলেন, রাজস্ব ক্ষতি নিয়ে দাবিদাওয়া অবশ্যই জানানো হবে ওই কমিটির বৈঠকে। আমরা রাজ্যের স্বার্থে যেকোনও দাবি আদায়ে কোনও সুযোগই ছাড়ব না। প্রসঙ্গত, ওই কমিটির মাথায় রয়েছেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত। মোট ১২টি রাজ্য ওই কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছে। সেখানেই নবতম সংযোজন বাংলা।