টান টান নাটক। আরবিআই অফিসার সেজে টাকা ভর্তি ভ্যান থেকে লুট সাত কোটির বেশি টাকা। বুধবার বেলা সাড়ে ১২টা থেকে ১টার মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ বেঙ্গালুরুতে। বিভিন্ন ব্যাঙ্কের এটিএম-এ পরিষেবা দেওয়া একটি সংস্থার ভ্যান তিনটি টাকার বাক্স নিয়ে জেপি নগরের এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক থেকে এইচবিআর-এর দিকে যাচ্ছিল। গাড়িতে ছিলেন সশস্ত্র নিরাপত্তা রক্ষীরাও। সেই সময়েই একটি হ্যাচব্যাক মারুতি গাড়ি ভ্যানের রাস্তা আটকে দেয়। তাদের সঙ্গে ছিল একটি এমইউভি-ও। টাকা সমেত ওই ভ্যানে চালক ছাড়াও ছিলেন আরও তিন জন। তাঁরা হলেন-কাস্টডিয়ান আফতাব, দুই বন্দুকধারী সুরক্ষাকর্মী রাজন্যা এবং তামাইয়া।
নাটকের সূত্রপাত ভ্যানটি যখন বুধবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ জয়নগর ২ ব্লকের কাছে পৌঁছয়। সেই সময়ে একটি হ্যাচব্যাক গাড়ি ভ্যানটিকে আটকায়। তার পিছনে ছিল ইনোভা, একটি এমইউভিও। তিনজন হ্যাচব্যাক থেকে নেমে নিজেদের আরবিআই অফিসার বলে দাবি করেন। তাঁরা ভ্যানে থাকা ব্যক্তিদের বলেন, ‘আপনারা আরবিআই-এর নিয়ম ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আপনাদের বক্তব্য রেকর্ড করতে হবে।’ ওই ভ্যানে থাকা ব্যক্তিরা সেই কথা বিশ্বাস করেন এবং নিরাপত্তারক্ষীরা নিজেদের বন্দুক হস্তান্তরিত করে এমইউভি-তে ওঠেন নিজেদের বক্তব্য রেকর্ড করার জন্য।
এর পরে ভ্যানের চালককে ঘটনাস্থল থেকে তিন কিলোমিটার দূরে গিয়ে আরবিআই আধিকারিকদের জন্য অপেক্ষা করতে বলে ওই দুষ্কৃতীরা। ভ্যান চালক সেই নির্দেশ মোতাবেক নিমহাস জংশনে পৌঁছন। তৎক্ষণাৎ দুষ্কৃতীদের কয়েকজন এমইউভি থেকে নেমে দাবি করেন, আগে পুলিশ স্টেশনে গিয়ে বক্তব্য রেকর্ড করতে। আর টাকার বাক্সগুলি আরবিআই-এর কাছে নিয়ে যেতে হবে। এ দিকে ভ্যানের চালক পুলিশ স্টেশনের দিকে রওনা দিলেও তাঁকে আটকে দেয় এমইউভি-তে থাকা দুষ্কৃতী। এর পর অস্ত্র দেখিয়ে টাকা লুট হয়। ওই টাকা ভর্তি বাক্সগুলি অন্য একটি গাড়িতে তুলে সেখান থেকে বেপাত্তা হয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।
ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনার অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। বেঙ্গালুরু সিটি-র পুলিশ কমিশনার সীমান্ত কুমার সিং জানিয়েছে, গোটা ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হবে। লুটের তদন্তের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পুলিশের দু'জন ডেপুটি কমিশনার এবং একজন জয়েন্ট কমিশনার। সংস্থাটির সুরক্ষা পরামর্শদাতা নিতারাজ দাবি করেছেন, সংস্থার কোনও কর্মীর উপরে তাঁর সন্দেহ নেই। তদন্তে সত্যিটা সামনে আসবে।