বড় খবর! এবার থেকে কলকাতা মেট্রোয় নিরাপত্তা দেবে এআই
আজকাল | ২১ নভেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বর্তমানে শহর কলকাতা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে মেট্রোর লাইন। তার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে নিরাপত্তাও। স্টেশনে থাকেন পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী, প্রতিনিয়ত চেক করা হয় ব্যাগ, থাকে মেটাল ডিটেক্টরও।
তবে এবার মেট্রো রেলের নিরাপত্তা ও নজরদারি ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে ব্যবহৃত হতে চলেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)।
ভারতীয় রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে মেট্রো রেলও চালু করতে চলেছে এই আধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক নজরদারি ব্যবস্থা। জানা গিয়েছে, এআই ভিত্তিক একটি সফটওয়্যার চালু করা হবে মেট্রোরেলে।
এই সফটওয়্যার সন্দেহজনক মানুষ বা যানবাহনের গতিবিধি, অনধিকার প্রবেশ, অযথা ঘোরাফেরা এবং ক্যামেরা ট্যাম্পারিং সহজেই শনাক্ত করতে সক্ষম হবে।
পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে পড়ে যাওয়া ব্যক্তি খুঁজে বের করা, নির্দিষ্ট রং শনাক্ত করা এবং মানুষের বা যানবাহনের সাথে রঙের অনুসন্ধান করাও সম্ভব হবে।
নতুন প্রযুক্তি চালু হলে মেট্রো রেলের নিরাপত্তা ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা আরও নির্ভুল ও আধুনিক হবে বলে আশাবাদী মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে, এবার থেকে শনিবারেও জোকা-মাঝেরহাট পার্পল লাইনে ট্রেন চলবে জানিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। আগামী ২২ নভেম্বর থেকে শনিবারেও চলবে পার্পল লাইনের মেট্রো।
তবে প্রত্যেক শনিবার করে মোট ৪০টি পরিষেবা চালানো হবে। যার মধ্যে থাকবে ২০টি আপ এবং ২০টি ডাউন। জানানো হয়েছে, প্রতি ২১ মিনিট অন্তর মিলবে ট্রেন।
শনিবার প্রথম মেট্রো জোকা থেকে মাঝেরহাট ছাড়বে দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে এবং মাঝেরহাট থেকে জোকা দুপুর ১টা ৪৯ মিনিটে।
শেষ ট্রেন ছাড়বে জোকা থেকে মাঝেরহাট রাত ৮টা ১১ মিনিটে এবং মাঝেরহাট থেকে জোকা রাত ৮টা ৩২ মিনিটে। নতুন ব্যবস্থায় সপ্তাহান্তে এই লাইনে যাতায়াত আরও সুবিধাজনক হবে যাত্রীদের জন্য।
কিছুদিন আগেই পার্পল লাইনে কাজের জন্য নেপাল কনস্যুলেটের সঙ্গে মউ স্বাক্ষর করেছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ।
রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডের অধীনে মেট্রো রেলওয়ে এবং কলকাতায় নেপাল সরকারের কনস্যুলেট জেনারেলের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে জানিয়েছে কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
এই চুক্তি অনুযায়ী নেপালের কনস্যুলেটের মালিকানাধীন ৪০৯.৫৩ বর্গমিটার জমির বিনিময়ে কলকাতা মেট্রোর ৫২৬.৩৪ বর্গমিটার সংলগ্ন জমি হস্তান্তর করা হবে।
জানা গিয়েছে, এই জমি হস্তান্তরের ফলে অনেকটাই এগিয়ে যাবে পার্পল লাইনের মেট্রোর কাজ। জানা যাচ্ছে, এই মউ স্বাক্ষরের ফলে পার্পল লাইনের প্রস্তাবিত মোমিনপুর-এসপ্ল্যানেড লাইনে মাটির তলার অংশের নির্মাণকাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হবে।
বিশেষ করে মোমিনপুর ও খিদিরপুরের মধ্যবর্তী ব়্যাম্প নির্মাণের জন্য ৪০৯.৫৩ বর্গমিটারের এই জমিটি অত্যন্ত জরুরি ছিল।
২০২২ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে নেপালের বিদেশমন্ত্রক, ভারতের বিদেশমন্ত্রক, মেট্রো রেলওয়ে ও আরভিএনএলের একাধিক বৈঠক হয়েছিল কাঠমাণ্ডু, নয়া দিল্লি এবং কলকাতায়।
বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল জমি বিনিময় নিশ্চিত করা। জানা গিয়েছে, একাধিক দফায় আলোচনার পর নেপাল সরকার জমি বিনিময়ে সম্মতি জানায়।
উল্লেখযোগ্যভাবে, কলকাতা মেট্রোর এই প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ ঘিরে একাধিক বাধা তৈরি হয়েছিল। বহু ভাড়াটে, দোকানদার ইত্যাদি জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্ট এবং পরে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন।
তবে তিন বছর ধরে চলা আইনি লড়াইয়ের পর সব মামলারই নিষ্পত্তি হয় এবং প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়।
সোমবার মউ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল কলকাতার ভিক্টোরিয়া স্টেশনের সাইটে অবস্থিত আরভিএনএল মডেল রুমে।
উপস্থিত ছিলেন নেপালের কনস্যুলেট জেনারেল শ্রী ঝাক্কা প্রসাদ আচার্য, মেট্রো রেলওয়ের ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার (হেড অফিস) শ্রী এস কে দুবে, আরভিএনএলের চিফ প্রোজেক্ট ম্যানেজার শ্রী বিপিন কুমার এবং ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের ডিরেক্টর ও ব্রাঞ্চ সেক্রেটারিয়েট প্রধান শ্রী আশীষ মিঢা।