দেবব্রত দাস: বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন। গঙ্গায় ঝাঁপ এক যুবকের। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্র মোবাইলে ভয়েস ম্যাসেজে জানিয়ে যায় যে, তাঁর বন্ধুকে সে ভালোবাসে। কিন্তু ওই বন্ধুর একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের ঠিক হয়। এটা সে মেনে নিতে পারছিল না। তাই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতকাল থেকেই নিখোঁজ সন্দীপ মালিক নামে বছর একুশের ওই যুবক। গঙ্গায় তল্লাশি চালানো হয়। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে গঙ্গার ঘাট থেকে সন্দীপের জামা, প্যান্ট, মানিব্যাগ ও মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। পরিবারের দাবি, সাঁতার জানতেন না তিনি। । সাঁকরাইল রাজগঞ্জে গঙ্গার পাড়ে তার জামাকাপড় ও জুতো পাওয়া যায়। এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে সাকরাইল থানার পুলিস বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। সম্পর্কের টানাপোড়েনেই মাঝ গঙ্গায় নেমে নিখোঁজ যুবক কি না খতিয়ে দেখছে পুলিস। সাঁকরাইলের রাজগঞ্জ ঘাটে গিয়ে গঙ্গায় নামেন ওই যুবক।
গঙ্গার ধারে থাকা কানন পাল নামে প্রত্যক্ষদর্শী এক মহিলা বৃহস্পতিবার জানান, জামা, প্যান্ট মোবাইল রেখে গঙ্গায় নামেন ওই যুবক। রাত পর্যন্ত আর তাঁর খোঁজ মেলেনি। গঙ্গার ঘাটে এখনও পড়ে রয়েছে যুবকের জামা, প্যান্ট, মোবাইল পড়ে থাকতে দেখেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। যুবকের মোবাইল থেকেই তাঁর বাড়ি ও থানায় ফোন করেন। খবর পেয়ে বুধবার রাতেই রাজগঞ্জের গঙ্গার ঘাটে ছুটে যায় সাঁকরাইল থানার পুলিস। ডুবুরি নামিয়ে ওই যুবকের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ওই যুবকের কোনও খোঁজ মেলেনি।
যুবকের কাকা রবিশংকর মালিক বৃহস্পতিবার দুপুরে বলেন, 'বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ভাইপো বাড়ি না ফেরায় আমরা ওর খোঁজ শুরু করি। ও বুধবার বিকেলে নাচের স্কুলে গিয়েছিল। তারপর থেকেই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে। আমরা সব জায়গায় খোঁজ করি। তারপর পুলিস জানায় ও গঙ্গায় নেমে নিখোঁজ গিয়েছে। সন্দীপ সাঁতার জানত না। তা সত্ত্বেও ও গঙ্গায় কেন নামল বুঝতে পারছি না। রাত থেকে গঙ্গার ধারে বসেছিলাম। পুলিস রাতভর তল্লাশি চালিয়েও ভাইপোর খোঁজ মেলেনি।'
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সন্দীপের মোবাইলে বন্ধুদের দেওয়া সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে একটি ভয়েস মেসেজ পাওয়া গিয়েছে। ওই ভয়েস মেসেজে কী রয়েছে, তা পুলিসের তরফে জানানো হয়নি। সন্দীপ গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন নাকি অন্য কিছু, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। খতিয়ে দেখছে পুলিস।