পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে তৃণমূলের দু’জন বুথ স্তরের এজেন্ট (বিএলএ)-কে মারধরের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) কাজ করার সময় তাঁদের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। পরে দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। দু’জনকেই হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। এক জনের আঘাত গুরুতর। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল। ভিডিয়োবার্তা প্রকাশ করে দোষীদের গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছেন কুণাল ঘোষ। তবে বিজেপি অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ভগবানপুরের জলিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা পবিত্রকুমার সাউ এবং দেবব্রত মাইতি। দু’জনকেই দল এসআইআর-এর কাজে এজেন্টের দায়িত্ব দিয়েছিল। বুথ স্তরের আধিকারিকদের (বিএলও) সঙ্গে তাঁরা ঘুরছিলেন, এনুমারেশন ফর্ম পূরণে সাহায্য করছিলেন ভোটারদের। অভিযোগ, গত কয়েক দিন ধরে তৃণমূলের এজেন্টদের ভয় দেখানো হচ্ছিল। নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। বিজেপি কর্মীদের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলছিলেন শাসকদলের স্থানীয় সমর্থকেরা।
তৃণমূল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে পবিত্র এবং দেবব্রত বিএলও-র সঙ্গে ফর্ম বিলি করতে বেরিয়েছিলেন। সেই সময় আচমকা তাঁদের উপর চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। তাঁদের মারধর করা হয় বিজেপির পার্টি অফিসে নিয়ে গিয়ে। দু’জনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। দেবব্রত ভগবানপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে পবিত্রের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাঁকে তমলুক জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে হয়েছে।
এই ঘটনার পর তৃণমূলের তরফে স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। কুণাল ভিডিয়োবার্তায় বলেছেন, ‘‘এসআইআর করে ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিতে চায় বিজেপি। আমাদের কর্মীরা ভোটারদের সাহায্য করছেন। তাতে ওদের অসুবিধা হচ্ছে। ভগবানপুরে যা হল, আমরা তার তীব্র নিন্দা করছি এবং অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতারির দাবি জানাচ্ছি।’’ আক্রমণকারীদের কথা বলতে গিয়ে হরিপদ দাস, বাবুলাল এবং নির্মল দাস নামের কয়েক জন বিজেপি কর্মীর নাম করেছেন কুণাল।
বিজেপি অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, ভগবানপুরে হামলার ঘটনা আদৌ রাজনৈতিক নয়। ভগবানপুরের বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি জানিয়েছেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে কোনও বিষয়কে কেন্দ্র করে বচসা এবং হাতাহাতি হয়েছে। রাজনীতির সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই। স্থানীয় বিজেপি নেতা দেবব্রত কর তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাল্টা মহিলাদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ওই এলাকায় তৃণমূলের কোনও ভোটার নেই। এসআইআর-এর কাজের বাহানায় তাঁরা এলাকায় ঢুকছেন এবং মহিলাদের শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করেছেন। স্থানীয়েরাই ওঁদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেছিলেন। পবিত্রকে সামান্য ধাক্কা দেওয়া হয়েছে মাত্র। সেটাকে এখন বড় করে দেখানো হচ্ছে। এটা ওদের এলাকা দখলের ছক। সাংগঠনিক ভাবেই আমরা এর মোকবিলা করব।’’